TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

দুর্জয় খান | কবিতা

 
বিদেহী বিকেল

বিদেহী বিকেলের গোপন অসুখে সূর্যকুচি লাগিয়ে ঝরে যায় ছায়াবৃক্ষের কুমকুম। যত কোলাহল দীঘল ধ্বনি, ভেসে বেড়ায় মেঘের সর্পিল শরীরে। অনুগামীর দিকে যায় না আর সূর্যাস্তের পালক। বেলেম্বুর বিলাপ। জীবন আটকে রাখা পাতার দেয়ালে, খসে পড়ে তিমির তাজমহল। মুঠোভর্তি সাইক্লোন আয়োজন করে ঝড়-ঝঞ্ঝার গান। আমি তো বিরানভূমির মেষপালক। বিদেহী বিকেলের ব্যবচ্ছেদ হয়ে সন্ধ্যা গড়ালেই ফিরে আসি মার্বেলের নগরে।


ক্ষরণের বেহাগতাল

ধী স্পর্শের উড়াল নিয়ে মৃত্যুমনস্ক মন দ্রাবিড়ঘাটে নোঙর ফেলে বীজতত্ত্বের সন্ধান করে। জন্মসূত্রে যে কটা টেরাকোটা অর্জন তার, অধুনা আয়নার ভেতর পুঁজি করে মেথিকান্দার নামে। বেনামের বিকেল, উয়ারী পথের ধারে লুকিয়ে দেখে মুসাফিরের কবর রাং পাতে মোড়ানো। মৃত্যুভেদী ছায়া, শরীরের মোকামে জ্বালিয়ে তোলে কবরের মোমবাতি। বস্তুত ছাইরঙা পাশ কাটিয়ে জীবনের শেষ সূরা পান করছে বিস্মৃত মন। উন্মাদের জল।


আলপোকার ট্রাপিজ

হীমলীন রাতের ঘুমহীন নীলতারার রুব্রুিক চিন্তায় অলীক প্রতিমার ছোঁয়া। সদ্যফোঁটার কলি শিয়রের নিকট আকুল আবেদন নিয়ে শূন্যের দেয়ালে টাঙায় দ্রৌণচক্র। মর্মরের মৃগয়া যোজনজ্যোৎস্নায় হেঁটে চলে বিবর্ণ চেরিফুলের পথে। বিহ্বল ফিঙের নির্বোধ কায়া ভ্রুকুঁচকে শুয়ে পড়ে স্ফটিক হৃদ-পেয়ালায়। শব্দের পাশে ট্রাপিজ আকার, আলপোকা জানেনা গহন ও হননের গান। আলুটিলাগুহার অর্কেস্ট্রা দ্বিশয্যার ঘরে বুনে মাহুত বিতান। নীলতারার বিস্ময় চোখে প্রশ্ন জাগে, যে ট্রাপিজ ঘুর্নায়মান থেকে স্থির তার ভেতরের কলা কোন দ্রাঘিমায় ঝুলে থাকে! কোন উদাহরণে রত্নাকর সচেতন ঋতুর বুনন তোলে! তার আলোররাণী, হরিণের বিপরীতে আলপোকার মৃত্যু নিয়ে চিন্তিত। বুনো হাওয়ার শক্তি নিয়ে সংশয়িত। অথচ ইয়ানা জানে এসব আলোর সম্মোহনী রূপ। অরূপের বিকার। চলনের চালন। 


বধুবৃত্তান্ত

ঋ বেদনার আয়নায় দুধপড়শি বধু ঘড়ির মাপে 

ক্ষয়ে ফেলে ; ব্যাকুল বিছানার লিলিফুল!

শরীরের আবডালে বুনে চলে জামদানী দুঃখ

রাত্রির ভেতর শ্রীমুখি আদিপ্রাণ বিন্দুর অনুরাগে 

উড়তে থাকে জেব্রাক্রসের ধী অধুনার আলকাপে

নিপাট ধ্বনির বিজারণ ঢেউ ফেলে কে ঘুমায়

পরমায়ুর ভেতর, নূপুরবেহালার রূপথলে!

জংশনের আলোয় বিষুবতল এঁকে কোন চিত্রকর

আহত করে বধুর ছায়ানীড়ের নৃত্য ; জলসঙ্গম।


শঙ্কার শব্দেরা মায়াহরিণের সমতট পেরিয়ে 

নির্জন সন্ধ্যে ঝুলিয়ে রাখে আলোকিংকরের বাঁশি

মুহুর্তের কথাকলি না থামার অভিপ্রায়ে দূরবীনে

চোখ রেখে এগিয়ে যায় মায়াসভ্যতার ভেতর 

বধুও ঋতুর ব্রা খুলে ঘুমায় বিস্ময়ের জলমাদুরে,

স্থির অবয়বে ; শরীরের পাটাতন খুলে! 


জুয়ার টেবিল

বিড়ালচোখে ময়ূরের বিধৌত অঞ্চল লুটিয়ে পড়ে

অলিভসংগীতের উঠানে; মুদ্রাহীন পাণ্ডুর মুখে!

বিদীর্ণ পাতার আলাপ নিয়ে যে অভিধান কিংবা

তাফসির; আয়ুর বিপরীতে বলছে ফোটাও গুলমোহরের লাল লাল অক্ষর -


অক্ষর কিংবা শব্দপ্রবাল!


দৃষ্টির দোলনায় স্বরপোষী বিড়ালের বৃত্তায়ন 

বিলোড়িত করে বোধের বায়স্কোপ। 


যে ভৌতিক চোরাবালি ময়ূরের দৃশ্যে, অলিন্দে ;

অপেক্ষার ভূগোলে নড়ে ওঠে তার দ্বি-ডানার আগন্তুক; হাড় মাংসের তরঙ্গে তার পিতৃপরিচয়, চুরি হয়ে যায় সব জুয়ার টেবিলে!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ