TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

সাতটি কবিতা | নিমাই জানা



মৌসিনরাম ও পরাবিদ্যার গন্ধ

টিংটং নিউট্রিনো, পরাবিদ্যার গন্ধ শুঁকে
কোয়ান্টামের নীল সবুজ ব্রাউনিয়ান ঘোড়া

গতিশক্তির তৃতীয় অলিন্দের দাঁত খুবলে নিচ্ছে চোখের নিচের
অদৃশ্য দশরথ, কুরুক্ষেত্র ঠিক জেকোবাবাদ, মৌসিনরাম
শহর ঘুমিয়ে থাকে নিমগ্ন পরকীয়ার ঈশ্বরী বেশে
বাবলাতলার নিচে ঝুমঝুম ব্রততী ফুলের পরাগ হে বিবাগী শঙ্খচূড়,
পরকীয়ার দোতারা মধ্যপ্রহরে বাজাতে শোননি
বারো জোড়া হাতিয়ার ফেলে সর্পগন্ধা সাপকে জড়িয়ে ধরি,
মনসা মন্দিরের নৈঋতে কিছু কাগজ ফুলের ডগা আর মাধব মাধব চোখ,
নীল রতিক্রিয়া শেষে অষ্টবসু সাপ দেখার নেশা জেগে ওঠে


ইনহেলার ও কিছু জীবাশ্মের পোশাক

তুলসী গাছের টব, মাটির হাঁড়ি, পঞ্চশস্য, জীবাশ্ম ভর্তি কৌটা আর
কাঁচা কাঠের গর্ভপাত রাসায়নিক বন্ধনীর মতো তাপমোচী
আগুনের তলপেটে বিস্তৃত খরগোশ পালন করে কেউ
হিউম আসে নীল চোখ, মার্চ মাসের কাঁকন নারী
দৌড়ে বেড়ায় মৃত্যু মৃত্যু খেলার পর
আজ কিছু অ্যাডিপোজ খাওয়ার দিন
ফোকাস দূরত্বের মা শুধু লুকিয়ে লুকিয়ে বিড়ি খায়
আমি শুধু ইনহেলার খাই, পেনটিডস খাই
গর্ভাশয় খাই, উত্থিত যৌনাঙ্গের এক হলদেটে দমক খাই
ভিস্কোসিটি প্লাজমা পুরুষের গায়ে কোন পোশাক নেই বলে চাঁদ উঠেনি
বাবাকে স্ত্রীলিঙ্গ মনে হতো ব্রহ্ম বেলায়


শীতকাল অন্তর্বাস সমগ্ৰ ও লিভোসেটিরিজিন

পোশাক পাল্টে নিলেই চিরহরিৎ কান্না বেড়ে যায়
পর্ণমোচী ছায়ার বাৎসরিক শ্রাদ্ধাদি ২৪ শে বৈশাখ ব্রুটালী মৌসুমীর গর্ভপাত
মাঠের মাঝে কংক্রিট নেশা জেগে উঠবে অংশুমানের
অন্ধকারের পরিধি ঠিক ছাতার মতো
ধীরে ধীরে মাথা ছাড়িয়ে গলায় চেপে ধরে লিভোসেট
গোখরো রাতের দৈর্ঘ্য কমতে কমতে
ভাতের থালায় জমাট ভাত খাই বর্গমূল করে
নীল রঙের ঘোড়াটি ছত্রিশ গড়দেশের গীত সমগ্ৰের অন্তর্বাস পরে
সুক্রোজের বাঁশি বাজায়
শরীর পাল্টে যায় সুক্রালফেট রঙের, 
মধ্য বর্ণের নারী প্রতিদিন সরীসৃপ বদলে
মাইট্রোকন্ডিয়া খায় অদ্ভুত কক্ষে
টুপ টুপ পটাশিয়াম দানাকে আরো জ্যামিতিক করে তোলে


জ্যামিতিক কালিদহ চড়া ও নিষিদ্ধ রডোডেনড্রন

কষ্টের কোন জ্যামিতিক চিহ্ন নেই
গায়ে গায়ে কৃষ্টাল জরায়ু গুলো নগ্ন সমদ্বিবাহুর ওভরাল এল খাচ্ছে
আইজাক নিউটনের কোয়ান্টাম কক্ষে
ছিপছিপে সেবিকা নারীর যোজ্যতা খুঁজতেই
অস্ত্রপ্রচারে বেরিয়ে আসে বুকের জাফলং
প্রকৃত ভগ্নাংশ প্রকৃতির খেলা করে রডোডেনড্রন আর অভয়ারণ্য
মৃত্যু একটি তৃতীয় শক্তি
হ্যান্ডলুমের ১১টি নিষিদ্ধ অন্তর্বাস খোলা অ্যালামুন্ডা চারা গাছ লাগিয়ে যায় বিবস্ত্র গোখরো
সত্যভামা আর আমি কালিদহ চড়ার ভেজানো
অ্যামোনিয়াম সালফেটে অবৈধ ষোলকলা পূর্ণ করি
উপসাগরের পদ্মফুলে শ্রীহীন কালসিটে
কফিনবন্দি খেলা করে পুংলিঙ্গ নৌকাটি
ফ্যালোপিয়ান খেতে চাইছে নোঙর সমগ্রের মৎস্যগন্ধা পুরুষ, ফ্ল্যাজেলীয়


কিছু মৃত্যু রংয়ের কাঁচের মানুষ

নোনাচর মানেই ব্রহ্মোত্তর শারীরিক ছত্রাকের খোঁজ
জ্যোৎস্না দরজার পাশেই বৃষ্টি ভেজা মৃতদেহ ঘুরে বেড়ায়
মৃতদেহের বালিশে ঘামের গন্ধেরা কিলবিল খুঁজে বেড়ায় রোমন্থক ঘোড়া,
মাঝে মাঝে মৃত মানুষেরা অক্ষর নিয়ে আসে
শ্যাম্পেন সদৃশ্য পাতাবাহার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট কিছু
ডিক্লাইন করে ছাদের শ্যামলা রঙের ব্রা টেপ ও জানালার কাঁচের মানুষ
কতবার বক্ররেখা হতে পারি নিজের প্রোফাইলে পিকচারে
শ্রীহীন মৎস্যজীবী নৌকা নগরের আদি বাসস্থান
সাইটোপ্লাজমীয় নর্মদার ভেতর অজস্র শারীরিক নোনা জল লুকিয়ে রাখে কাক
এ শহর উপাসনাস্থল,
মা নেই মানে সব কিছু মিশ্র ভগ্নাংশের গোলাপি শাড়ি
প্রাচীন ছদ্মবেশ পুরুষ নগ্ন হয় নিষিদ্ধ কাগজের তলায়
আমাদের শীঘ্রপতন অশোক লুকিয়ে থাকে
বিজ্ঞাপন চাদর মুড়ে শুধু প্যান্থেরা টাইগ্রিস খায় রাতের গন্ধরাজকে


আত্মহত্যা পরবর্তী ন্যাশপাতি ফলের দোকান

নৈঋত কুয়াশার একাধিক পুরুষ অনুর্বর কথাকে খুঁজে বেড়ায়
দেয়ালে দেয়ালে অদ্ভুত রাজযোগের অবয়ব
বিছানায় বোধহয় কোনো অশৌচ কাক নেমে আসে
গভীর রাতে শুধু গুণিতকের খেলা
আমি শুধু উপত্যকায় পর্ণমোচী খুঁজে বেড়াই
একটা বিন্দু বিন্দু নয়, অসংখ্য আত্মহত্যার জমাট রক্ত দানা
ধীরে ধীরে আগুন খেকো নররাক্ষসেরা
বুকের চিনচিনে ব্যথা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে
রাতের বেলায় রঙ্গন ফুলের খোঁজে গভীর অরণ্যে মিলিয়ে যায়
সমব্যথী রঙের ফল দোকান
কেউ ন্যাশপাতি ফল এনে দেয়নি
শুকিয়ে যাচ্ছে পুংকেশর, তলপেট, পিটুইটারি আর কিছু জমাট হিমোগ্লোবিন
রাত্রি তিনটে 15 মিনিটের মানে দ্বিখণ্ডিত জ্যামিতিক
ব্রহ্মলোক ঈশ্বর প্রাপ্তবয়স্ক স্বপ্নগুলোকে খুঁজবেন


আইসোটোপ ও গোখরো সাপের জননাঙ্গ

কোন আইসোটোপের নিজস্ব জননকেন্দ্র নেই
চন্দন গাছের গোড়ায় ঈশ্বর বসে আছেন বিভাজিত গায়ে
একটি হ্যালোজেন ছায়া প্রতিদিন জড়িয়ে ধরে গোখরো সাপের মতো
স্ত্রীলিঙ্গ প্রজাপতির আজ শুধু উপচিতি কথা হোক
আমাদের এখানে নগ্নজিতির বলে কেউ থাকে না
অশ্বত্থামা গর্ভকেশর ধ্বংস করে ফেলার বাতাস জানতেন
সবাই রাতের বেলায় নিঃস্বার্থ প্রতিবিম্ব কুরে কুরে খায়
বর্ষায় ছায়ার নিচে কিভাবে প্রতিটি সাপের গন্ধ
রাস্তা পেরিয়ে যাচ্ছে জলাশয় থেকে
বিদূষক সাপ প্রতিদিন রাজযোগের সংগীত শোনাও এক প্রাচীন সম্রাটকে
তার ঠোঁটে শ্বেতী রোগের প্রকোপ
প্রতিটি বুকের কাছে একটি ক্ষতমুখ আছে
মুখের মতো দেখতে অথচ মুখের মতো নয়
গাছের গোড়ায় বসে থাকা ক্ষয়জাত হয়ে কোন ঈশ্বর ও দেবতা
শুধু নোনামাটি জানে গোপনাঙ্গের ভূপ্রকৃতি



নিমাই জানা। কবি। জন্ম কোনো-এক শিব চতুর্দশীর দিন, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিমবঙ্গ ভারতে। কবিতার ভেতর একটি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ খুঁজে পাওয়ার সাধনা করেন। প্রথম কবিতাগ্রন্থ: ‘ছায়ার মূলরোম’, সর্বশেষ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘ঈশ্বর ও ফারেনহাইট জ্বরের ঘোড়া’ (২০২২)।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

  1. কি বলবো? উপমায়, উৎপ্রেক্ষায়, অলংকারের অভিনবত্বে, ভিন্নমাত্রায় একেকটা তুমুল লাগল, অন্যরকম

    উত্তরমুছুন
  2. আহা! পড়তে পড়তে আনমনা হয়ে গেলাম। ডুবে গিয়েছিলাম মনোহর রুপকের জগতে। লেখক সম্পাদক প্রকাশক প্রত্যেককেই কৃতজ্ঞতা জানাই এমন কবিতা পড়ার সুযোগ দেয়ার জন্য।

    উত্তরমুছুন

মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।