স্বল্পদৈর্ঘ্য ছায়াছবি
মধ্যরাত
ঝেঁকে বসেছে নিভৃত
‘থ’ হয়ে আছি
‘থ’ আধারের মতো
জমা হয় নীরবতার ভার
ভার গলে প্রাবৃষ
থোকা থোকা পানাফুল
ফুটে আছে মনোরম
মধ্যরাত
ঝাপটি মেরে বসে আছি
নিজের মগজে
স্বল্পদৈর্ঘ্য কোন
চরিত্রে।
উৎসর্গ
সেই সে দরজাকে
সেই হামাগুড়িকে
সেই সে আমাকে
সেই পায়ের তালুকে
২১ আশ্বিন ১৪৩০
এই সব তবু ভালো৷ নিচোল জড়ানো সারারাত ঝড়ো ঝর্ ঝর্ বৃষ্টি।
পৃথিবীর জীর্ণ সংসারের মৌনব্রত সীন।
অনাদরে বেড়ে ওঠা অন্ধকারে ঘুম হাবুডুবু ঘুম ঘুঙুর বাজা রাত—
দুয়ারে দাঁড়ায় ঝঞ্ঝানিল করুণ শিশুর মতো রোদন তুলছে থেমে থেমে—
বরাবর ছাদের সাথে মিশে গেছে থাম, বিজলিতে কাঁচা ঘুম তটস্থ—
রুপার মতো জল রক্ত হতে উদ্গম দুধ সাদা রক্ত স্তবকে স্তবকে
রোদে শুকিয়ে জল ঘোলা রঙ ধারণ করেছে যে–সেই ফুটন্ত জলের আঁচে সাদা হয়ে যুগেছে কলেবরে বহমান লাল-খুন-লাল—
তোমার শরীরেও হচ্ছে পাকানো রক্তে রক্তে ঝরানো ঝাঁজ—
ঝাঁঝ বের করে আনে হাওয়া রঙের হিম রক্ত— খাটিতে— মাটিতে— মাটি হয়ে রয়।
সকল ভবিষ্যৎ হয়তো অন্ধকার যবনিকা আর সার হয়ে প্রজন্ম করবে ভোগ৷ সুশীতল খানিক এ সময়।
সমুন, ছাইরঙা মার্জার তোমার চোখে ঢুকে যাইতে দেখেছি আমি
ঈদ আব্বার পায়ের মতো শুকায় যাচ্ছে, উচ্ছ্বাস আম্মার রুপের মতো ম্লান হয়ে যাচ্ছে। মাথার ভেতর ছায়া ফেলে যায় ছায়া উর্বশী। ছায়া ছায়া হাসি ছায়া বরণে। মিহি বিবৃতিতে যার চতুর্দিক জলে গেছে। শান্ত মন উচাটন মাথা নিয়ে দুধ চায়ে ঠোঁট। ডাকে, আয় আয় ছায়াবন-বিথী, মেঘ ঘন খালপাড়, পুরান দিঘি, পুঞ্জি ও বাঁশঝাড় রেখা হয়ে ঘুরে যা মগজের কূল।
হে দুঃখ মৈনাক বিকেল, জাগালে নাড়িপোঁতা টান। কাঁচে বৃষ্টির ফোঁটা পিছলিয়ে পড়ে— আত্মহারা ধূলির আত্মহার সমাধি। সমাধিতে সমাধিতে ঘাসফুল তৃণ। নিজেরে নিজে মনে করি ঘৃণ।
পা-হীন উদভ্রান্তের সাথে দোস্তি পেতে গড়িয়ে পার করছি জীবন। যেমন জড়ো করে মানুষ মানুষের কাছে হই পাগল। জনসাধারণে মন ভালো নেই অবিরামের অদৃশ্য দৃশ্যের এজলাস খাড়া করে দেয় কাঠগড়ায়। আনত চোখে তন্মন হয়ে হাওয়া ও মেঘের দিকে টানতেছি নোঙর। মাগরিবের ডাকের মতো ছড়িয়ে পড়ি সন্ধ্যায়। সন্ধ্যার ভিতর দিয়ে লাল ঘুড়ি উড়াই নীল সুতা বাঁধা— রাত পার করে কল্যাণের প্রস্থ ডাকের মুখে লোহুর স্রোতের দিকে তাকিয়ে রইবে মায়াপ্রপঞ্চ চোখ। তাজা শোণিমা ছড়ানো দুনিয়ায় ছোরা হাতে তুলব অনাগত শিশুর খরচা। জন্ম যুবক, মৃত্যু যুবতি দুইজনের সংযোগ সময়টুকুই ক্ষিতি।
সন্ধ্যা আর মেঘ একসাথে গড়িয়ে নামছে পৃথিবীতে। লালের আবির পশ্চিম আকাশে কালো হয়ে যাওয়া গাছের উপর নিভে যাচ্ছে।
সমুদ্র
সমুদ্রে লিখেছি লাল কালিতে ’সংসার’। ঢেউ এলো আর মানুষ বলে উঠল শেষ।
সমুদ্রে লিখেছি নীল কালিতে ‘সংসার’। ঢেউ এলো আর স্বজন বলে উঠল শেষ।
সমুদ্রে লিখেছি কালো কালিতে ‘সংসার’। ঢেউ এলো আর প্রকৃতি বলে উঠল শেষ।
লিখেছি রঙহীন কালিতে ‘সংসার’। ঢেউ আসে যায় কেউ আর বলে না শেষ।
শেষ শোনার জন্য উত্তাল সমুদ্রে দিয়েছি ঝাঁপ। ঢেউ যায় আসে৷
কেউ তো বলছে না শেষ—
শেষ কোথায় ঘুমিয়ে আছ পাখি
কোথায় লুকিয়ে আছ পাখি
পাখি ও পাখি
যেন একদিন কম চব্বিশ বছর যাবত তোমাকে জড়িয়ে ধরে পালকে নাক ঘষি না—
শেষ, তিনদিন পর কি তোমার শাদা পালকের ভিতর দিয়ে চোখ মুদে তাকিয়ে থাকব। আর অনেকগুলো পালকহীন পাখি এসে কলরব তুলবে ‘সংসার’ আমার স্বামী হয়। তারপর আমি কি সংসারকে থাপ্পড় মারব?
1 মন্তব্যসমূহ
very brilliant works you've published. I honour your effort. thank you najmul vai for this long waited literary works. very very thank you all, the writers and the great editor.
উত্তরমুছুনমন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।