এক
ভূগোল ক্লাসের স্মৃতি ভুলে গেছি তমোগুনে! মধ্যরাতে
কিচ্ছু মনে পড়ছে না কোনোমতে, যেন স্মৃতিখণ্ড জমা নেই
কোথাও; নির্জনে ডাহুক ডাকে নাই বুঝি সারাংশসমেত৷
কী বলি সেটা আর কার কাছে বলো, সকলই সকল; তুচ্ছ আলো৷
ও মরণ — রাত্রির ত্রাতা, অনাহূত বেদনার ভারে ন্যুব্জ জীবন।
দুই
থেমে থেমে আসা তুমুল বর্ষাদিনে হিজিবিজি
দিকচিহ্নহীন পাগলাহরিণের থামার ইচ্ছেটুকু
দেখি না কোথাও! এমন তীক্ষ্ণরাতে শুধু শুধু
তাকিয়ে বাঁচা, অসহায় প্রজাপতি ছাদের কোণে
রঙভরা ডানা দেখাতে চায় না সে-ও; অসহায়।
তিন
উন্নত মন্দিরের কাছে প্রার্থনা করেছি — এ রাত
পূর্ণদৈর্ঘ্য হোক; নীলাভ ভায়োলিন স্থায়ী হোক
আদরের করোটিতে। মৃত শরীরের স্মৃতিবাহী
সকল জাহাজ জেগে উঠুক মানুষমেশিনের
অযৌন শিরদাঁড়ায়, টিক টিক শব্দঘন্টা হয়ে।
চার
ছাপোষা মধ্যরাতে পুরোনো প্রেমিকাকে মনে পড়া
দোষের কিছু নয়। যখন তা ছিলো বৃক্ষের নতুন
পাতাদের মতো। ওরা সুউচ্চ জিরাফের গ্রীবা থেকে
নেমে এলে, যে উজ্জ্বল পাখিঘুম আমার দিকে
তাকিয়ে থাকে, ওর কোনও ভাবনারেখা নেই!
পাঁচ
ঐচ্ছিক প্রেমে খসে প’ড়ে শৈশবের সমূহ জিহ্বা
জীর্ণ ভিখিরি হয়ে আটকে গ্যাছে হলুদ ক্যানভাসে।
এরকম অন্ধকার সময়গুলোতে মানুষ কী করে!
নতুন প্রেমিকার কথা মনে ক’রে উচ্ছন্নে যায়
না কি ডায়নোসরের ফসিল বুকে নিয়ে ঘুমায়?
[আগামী শনিবার প্রকাশিত হবে দ্বিতীয় কিস্তি]
এই লেখকের অন্যান্য লেখা:
• সাম্য রাইয়ানের মুক্তগদ্য “রাত্রি একটা অনাহুত বেদনার নাম”
• সাম্য রাইয়ানের ‘চোখের ভেতরে হামিং বার্ড’ থেকে
• সাম্য রাইয়ানের মুক্তগদ্য “রাত্রি একটা অনাহুত বেদনার নাম”
• সাম্য রাইয়ানের ‘চোখের ভেতরে হামিং বার্ড’ থেকে
• সাম্য রাইয়ানের মুক্তগদ্য ‘একটা সত্যি কথা বলো’
সাম্য রাইয়ান। কবি ও গদ্যকার। জন্ম নব্বইয়ের দশকে কুড়িগ্রামে। প্রকাশিত কবিতাপুস্তিকা: ‘বিগত রাইফেলের প্রতি সমবেদনা’, ‘মার্কস যদি জানতেন’। কবিতাগ্রন্থ: ‘চোখের ভেতরে হামিং বার্ড’। পোয়েটিক ফিকশন: ‘হলুদ পাহাড়’। প্রবন্ধ: ‘সুবিমল মিশ্র প্রসঙ্গে কতিপয় নোট’। একযুগ যাবৎ সম্পাদনা করছেন ‘বিন্দু’।
3 মন্তব্যসমূহ
ভাল্লাগসে। পরের কিস্তিগুলোও পড়বো।
উত্তরমুছুনতুমুল। এগিয়ে চলো
উত্তরমুছুনভালো লাগলো
উত্তরমুছুনমন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।