TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

আবু তাহের | কবিতা


শূন্য পকেটের পৃথিবী

শূন্য পকেটের একটা সুর আছে, যে সুর রক্তকে শান্ত করে দেয়

মা হারা বিড়াল ছানাটির চোখ ফুটেনি,
তার মিহি কণ্ঠে কার সুর বাজে?

প্রতিটি মূহূর্তই মিথ্যা, শূন্য পকেট ছাড়া যে মিথ্যা তুমি ছুঁতে পারও না।

শূন্য পকেট বুঝে- বাসী রুটির স্বাদ, সীগারেটের শেষ টান,
আধময়লা শার্ট, মুখভর্তি দাড়ি

কসাইখানার ছুরি ছুঁয়ে ছিল যে কুকুরকে
সেও জানে শূন্য পকেটের বহিবিহান

শূন্য পকেটে ভীর ভর্তি চায়ের দোকানেও তুমি একা, একা গরীব দেশের ভিক্ষারীর গানের মতো।

একটি শূন্য পকেট, একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক জরুরী।


শত নদীর জীবন বৃত্তান্ত

ঐযে বাড়িটা এক দশক আগে ওটা ছিল বালির সংসার। দুই দশক আগে ভাতফুলের উদ্যান। তিন দশক আগে একটা নদী। নদীটি ছিল এক সুটাম যুবতী। যুবতীস্তনের মতোই ছিল দু'ধারের বৃক্ষরা। বাতাসের দৌঁড় ঝাঁপে তারা ঢেউ খেলত। নানা প্রজাতির পাখিরা ওখান থেকেই তুলে নিতো স্নেহ ও প্রেম। ওটা এখন নদীর কবর। ওখানে সাপ, ব্যাঙ, শামুকরা মিলে বেঁধেছে এক আলিসান বাড়ি।


কথায় ফুটানো ফুল

অসময়ে ফেঁটে যাওয়া ডালিম, রক্তাক্ত বুক তুমি কাকে দেখাও? তুমিও কি ফলরাজ্যের অনাদৃত কোনো কবি? অসম দ্র্যারিদ্রের ভারে ছুঁড়ে দিয়েছো আর্তনাদ! অথচ ফলাওকাঙ্ক্ষার দু'টো ড্রাকুলা দাঁত ছুটে আসছে তোমার দিকে! বৃন্তচ্যুত পর্যন্ত প্রতিক্ষা করো, গ্যাসবেলুন ভেবে উড়িয়ে দেবে তোমার সুস্বাদু হৃদপিণ্ডের আকাচা প্রশংসা।


রাষ্ট্রীয় দর্শন বিভাগ

এটি একটি  সাপ লুডুর বোর্ড। হতে পারে এ এক স্বাভাবিক দর্শন। আচ্ছা এখানে মইয়ের বদলে ঘোড়া রাখলে কেমন হয়? নর্তকী চাঁদ গায়ের জৌলুস ছড়ালে বাবা ছেলে মাদুর পেতে লুডুর বোর্ডে বসবো। ছেলে ছুটিয়ে দেবে ঘোড়া। আমি চন্দ্র বিজয়ের স্বাক্ষী হবো! জানি তা হবার নয়! প্রতিটি মইয়ের আগাগড়ায় হিসহিস করছে সাপ। 


পাপের বারবিকিউ

মাছি এবং মানুষের চোখের পার্থক্য আছে, ব্যবহারে নেই। প্রিয় বার্নাড'শ আপনি যে মাছির চোখের ব্যবহার লিখিয়েছেন, তা আমাদের রেজিস্ট্রার খাতায় আঁকতে পেরেছি। কিন্তু নর্দমা ও দুধের ছানার পার্থক্য এখনও কোনো কালো অক্ষরে ধরা পড়েনি। বইয়ের থেকে বৈচিত্র্যময় অভাব আমাদের যা কিছু শিখেছে, তার কিছু নমুনা আঁকা আছে ঘাম ও মাটির নকশায়। পাপ-পূণ্যের মিশ্রণে আমরা যে বারবিকিউ বানিয়েছি, সত্যি শয়তান ও ফেরেশতা উভয়ে তার খুব প্রশংসা করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ