TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

‘চোখের ভেতরে হামিং বার্ড’ নিয়ে আমি যা ভাবছি


প্রত্যহ ১২ টা বেজে গেলে যখন আমার সকাল হয়, অভ্যাসমত প্রার্থনা সেরে শয্যা ত্যাগ করি। প্রার্থনা বলতে আমি চিৎ-শোয়া অবস্থায় তাজবিদ মেনে, ঠিকঠাক মাখরাজ আদায় করে জোরেসোরে কোনো একটি বিশেষ কবিতার পাঠকেই বুঝি। বিশেষ কবিতা হলো— যে কবিতার শরীরে লাল-নীল বিবিধ রঙিন দাগ লেগে যায়, আমার আঙুল-স্পর্শে শিহরিত হয় যে কবিতা কিম্বা যে কবিতার প্রত্যেক অক্ষর হস্তান্তর করতে থাকে আমাকে, আর আমি অধিচিন্তায় প্রবাহিত হতে থাকি, মূলত আমাকে বিরাজ করতে হয় ওইসব অক্ষরে অক্ষরে। এরকম একটি কবিতার নাম হলো— ‘উড়ন্ত কফিন’। অতি আবেগী বাচ্চাদের মতো বলতে ইচ্ছে করছে— ‘উড়ন্ত কফিন’ আমারই লিখবার কথা ছিল, দেরি হওয়ায় সাম্য রাইয়ান নামের এক হিতৈষী কবি সেটি লিখে ফেলেছেন, অথবা ‘উড়ন্ত কফিন’ আমি প্রার্থনায় পাঠ করবো বলেই লেখা। ‘চোখের ভেতরে হামিং বার্ড’ না হয়ে বইটির নাম ‘উড়ন্ত কফিন’ হতে পারতো, হলো না কেন?! হলো না বোধয় ‘জীবনপুরাণ’ নামক কবিতাটির জন্য। যেটি মধ্যরাতে ইশারায় ডাকে, শূন্যতা আর আত্মহননের কথা শোনায়, আমাকে নিমেষেই বানিয়ে ফেলে একটা দুরন্ত লাটিম— আমি জেনেও না জানি—
‘ধর্মের সীমানা আছে, মানুষ অসীম’।
বইটির নাম ‘জীবণপুরাণ’ও হতে পারতো। হতে পারতো ‘বানানবিভ্রাট’ অথবা ‘বোধিদ্রুম’। মূলত আমি একটা ধা-য় ভুগছি, ধা-টির নাম 'দ্বিধা'। বইয়ের ৪৮ টি কবিতা পাঠ করার পর ভাবছি মাথার ভেতরে ‘ট্রাফিক জ্যাম’ লেগে আছে কিনা! ৪৮ টি কবিতাই কেমন আটকে আছে মাথার ভেতর, মস্তিষ্কের অসীম সীমানা পেরুতেই পারছে না, প্রত্যেকটিই যথাস্থানে দাঁড়িয়ে আছে নিজস্ব স্থিরতায়! আমার ভেতরকার সত্ত্বা একবার এর কাছে যাচ্ছে— একবার ওর কাছে যাচ্ছে। বিবেচনা করছি, সবকটি কবিতাই কবিকে তীক্ষ্ণমান দাবি করার যোগ্যতা রাখে। চলুন ধরে নিই, সবগুলো কবিতাই একেকটি হামিং বার্ড। অতঃপর কবিতাগুলো পাঠ করি চলুন, আর দেখি তো চোখের ভেতরে সেসব খেলা করে কিনা, কিম্বা মাথার ভেতরে!
‘আদিগন্ত দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আসলে কিছুই শিখিনি আমরা’
–সাম্য রাইয়ান


হোসাইন মাইকেল। কবিতা ও গদ্য লেখেন।
জন্ম ৮ জুন ১৯৯৫, ফুলবাড়ি, কুড়িগ্রামে।
সম্পাদনা করছেন ‘দিব্যক’ ওয়েবজিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. লেখাটি মনোহর লাগল৷ আপনার এই কথাটি মর্মস্পর্সী "সবগুলো কবিতাই একেকটি হামিং বার্ড।"

    উত্তরমুছুন

মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।