হামিংবার্ড
চোখের ভেতরে একটা হামিংবার্ড
নিয়ে বসে আছি;
চমকে দিওনা তাথৈ
উড়ে যাবে ৷
উড়ে যাবে তারা, স্বপ্নেরা
সারি সারি ডানা
ঘুমের ভেতরে বয়ে চলা নদী
হাতের তালুতে বয়ে যাবে
ঢোরা সাপ, রক্তের ধারা
ক্রোধ
এত রোদ তুমি কোত্থেকে বের করছো?
এত উন্মাতাল সুর, সংগীত
বিচিত্র কাতারে বর্ণে; বরফের মতো
ফোঁটা ফোঁটা ঝরে - ফুরিয়ে যাচ্ছে বোধ।
কোথায় সে গ্রহ, এত হাসির শব্দ আসে!
আমার শিশুরা কাঁদছে! এদের ঘুম ভেঙে গেছে।
কুড়িগ্রাম
উত্তরে ফিরে এলে পূর্বমৃত মেঘ
অনিচ্ছায় প্রেম বাড়ে — পুরনো আবেগ৷
বলো কেন ষোলনদে জাগাচ্ছো প্রণয়
প্রবীণ জানেন সবই — ক্ষুব্ধ গতিময়৷
সোনাভরী–ফুলকুমর সুসজ্জিত মায়া
শহরের নাভিতে জাগে — ধরলার ছায়া৷
অগণন সম্পদশালী — আরও উচ্চ দাম
বেহিসেবী ঘুমন্ত মেয়ে — তীব্র কুড়িগ্রাম৷
তোমাকে
ক্যামেরা ধরতে পারেনি তোমাকে, ছবিগুলো...
চশমায় লেগে আছে অদ্ভূত স্নিগ্ধতা
যা তোমার হৃদয় থেকে উৎসারিত।
জুলাইয়ের কোনও এক সকালে
আমি জন্ম নিলাম শব্দ থেকে
আর আমার সামনে উন্মোচিত হল
পৃথিবীর প্রবেশদ্বার!
তোমাকে পুনর্বার
এভাবে বোঝানো যাবে না সবকিছু
যতোটা দেখতে পাচ্ছো, আনন্দ
তা কেবলই আমাদের মধ্যকার
রঙিন বিভেদপর্দা।
মানতে হবে, বিশ্বাস রাখার মতো
কোনও মেশিন এখনো তৈরি হয়নি।
তুমিতো মেশিন নও—
পর্দার ওপাশে একটি রঙিন প্রজাপতি।
তোমাকে শেষবার
টান দিলে খুলে আসে চোখের পালক,
তবু কোলাহল বাড়ে
দৃশ্যজুড়ে।
তোমাকে পাই না বলে
ভীষণ মাথা ধরে
ঝিমঝিম করে।
নাম
অনেকটা প্রেমের গভীরে থাকি
অনেকটা ঝড়ের গতিতে থাকি
নামের ভেতরে থাকে সমূহ সম্ভাবনা,
ছায়ার অাড়ালে হাসে
চিত্রকল্পের বাঘ!
তলিয়ে যাচ্ছি চোখে, ওহ হামিং বার্ড!
নিজেকে অচেনা লাগে, অপর থেকেও;
অধিক যাপনে, নামের গোপনে
চূড়া
মিছা কথা কইও না, আমার শীত করে
তীব্র শীত — পকেটে মহাশূন্যের ভার
হেলে পড়ছি; ক'টা দিন
ঘুরে আসবো দার্জিলিং
অথবা প্যারিস ৷ গাছ থেকে গাছে
ছড়িয়েছে আমার মাতাল
হবার শোক! — হেই, সাম্য এবার
চূড়ান্ত হও, লাফ দাও, মরে যাও ৷
আলাপপর্ব
আবার মিলবো কবে— সেইদিন ভেজানো ভোরের পাত্রে
বুঝবে সবটা পুরনো অভ্যেস, সকরুণ হাহাকার
— হবে।
— কবে?
তাকিয়ে থাকার কাল মিলবে আবার নদীপারে
ছড়ানো বাদাম শাড়িতে বাঁধবে যদি ধুলোয় লুটার কালে
সূর্যের রূপ ম্লান হয়ে তবু লুটাবে পায়ের কাছে
— কার?
— তোমার।
আলাপপর্ব: ২
সা : মেঘের পাত্রে দ্যাখো জীবন ভাসছে যুগপৎ..
তা : এর চে’ বৃষ্টি ভালো।
সা : মানুষ ছুটছে মানুষের ভয়ে, পালাচ্ছে হরদম।
তা : চলো বাড়ি ফিরি কিছু ছলাৎ ছলাৎ শব্দে…
সা : আগুনের কোনও উষ্ণতা নাই না কি!
তা : লাইচ্যুত বগির কিনারে অবাক ফড়িং দাঁড়িয়ে…
সা : চিন্তাবাক্স থেকে ছড়িয়ে পড়ছে মরানদী ছাইরঙ…
তা : প্রতিটি ভোরের প্রস্ফুটিত হবার শব্দে তোমার ঘুম ভাঙে না?
সা : কতো শিশুতোষ মৃত্যুর মতো দূরাগত সৈকতের গানে ঢুকে গ্যাছে জ্বলন্ত কেরোসিন..
তা : ঘুঙুরের শব্দ শুনতে পাচ্ছো, খুব তীব্র হচ্ছে ধীরে…
সা : শোনার ভেতরে শাদা পর্দা ছিঁড়ে যাচ্ছে…
তা : আর ঘনিয়ে আসছে পাঁজর ভাঙার শব্দ!…
[কবিতাগ্রন্থ: চোখের ভেতরে হামিং বার্ড
প্রকাশনী: ঘাসফুল
প্রচ্ছদ: শামীম আরেফীন
বইমেলায় স্টল নম্বর: ৪৬৩]
সাম্য রাইয়ান। কবি, মুক্তগদ্যক, সমালোচক।
জন্ম নব্বইয়ের দশকে কুড়িগ্রামে।
প্রকাশিত কবিতাপুস্তিকা: ‘বিগত রাইফেলের প্রতি সমবেদনা’, ‘মার্কস যদি জানতেন’।
পোয়েটিক ফিকশন: ‘হলুদ পাহাড়’।
প্রবন্ধ: ‘সুবিমল মিশ্র প্রসঙ্গে কতিপয় নোট’
প্রকাশিতব্য কবিতাগ্রন্থ: ‘চোখের ভেতরে হামিং বার্ড’।
সম্পাদিত লিটলম্যাগ: বিন্দু।
জন্ম নব্বইয়ের দশকে কুড়িগ্রামে।
প্রকাশিত কবিতাপুস্তিকা: ‘বিগত রাইফেলের প্রতি সমবেদনা’, ‘মার্কস যদি জানতেন’।
পোয়েটিক ফিকশন: ‘হলুদ পাহাড়’।
প্রবন্ধ: ‘সুবিমল মিশ্র প্রসঙ্গে কতিপয় নোট’
প্রকাশিতব্য কবিতাগ্রন্থ: ‘চোখের ভেতরে হামিং বার্ড’।
সম্পাদিত লিটলম্যাগ: বিন্দু।
0 মন্তব্যসমূহ
মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।