১৬
বিষণ্ণ টমেটোগুলো দোল খায়। যেভাবে বাতাস এক স্তন থেকে অন্য স্তনে, আর কারসিনোমা হওয়া মহিলাগুলো চেয়ে থাকে বিষণ্ণ বদনে। যৌনতা সঙ্গত ও সম্পর্কিত, জলের সাথে ছায়ার যা। বিষণ্ণ টমেটোরা দেখে আইফেল টাওয়ারের নিয়ারেস্ট সিমেট্রি ভেসে যাচ্ছে আলোয়। সেখানে জমা হয়েছে খয়েরি সন্তানসন্ততিরা।
এদের পূর্বসূরিরা যৌনতা করেছিল। খেয়েছিল দোল বিষণ্ণ খয়েরির ওপর বিষম গোলাপি, এবং এরাও। অথচ দিনকাল হারিয়ে গেল ডালিমতলায় আর তার 'পরে ছুটে গেল হরিণ রঙের আলো দেরাজের পাশে।
আইফেল টাওয়ারের আওতায় ওই বেজন্মা টমেটোগুলো দোল খায়, কীটের মতো যেন কীটনাশক থেকে বাঁচছে পালিয়ে। আর স্তনহীনারা দেখে কীভাবে একের পর এক পোকা লাফিয়ে পড়ছে আগুনের ভেতর, মাংসের ওপর, স্থিতিস্থাপকতায়...
১৭
বৃষ্টি টমেটোশহরে স্বরলিপির মতো। ব্রিজের ওপর পড়ে, আর লোহার গান শুনিয়ে যাদের জুতোর ফিতের ওপর শিশির হয়ে ওঠে, তাদের গড় বয়স সাত। তার স্কেল ঠিক নেই। কণ্ঠ থেকে কণ্ঠের দুরত্ব মাপতে হারিয়ে যায় সোনালি ঘেরের ফ্রক, পিছলে যায় ন্যুড লিপস্টিক।
স্বরলিপি টমেটোশহরে বৃষ্টির মতো। বিপদসীমার খুব কাছাকাছি টমেটোগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় টেবিলক্লথের ওপর, যেখানে ছুরির নাম মায়া, ধারের নাম সময়।
স্কেল তাদের ঠিক নেই। ঠিকানা পেরিয়ে টমেটোগুলো দেখে কি নিদারুণ খালি পিঠে অপেক্ষা করছে খয়েরি পুরুষেরা, চাবুকের। আলো নেই। যাদের গড় বয়স সাত, তারা ফিরে যাচ্ছে ঘণ্টার ছায়ায়, সেখানে আঁধারে দাঁড়িয়ে স্বরলিপি, কণ্ঠের কুণ্ঠা কাঁপিয়ে বেরিয়ে ঝাঁপিয়ে আসতে চাইছে টমেটোগুলোর ওপর।
১৮
আই অ্যাম নট ইন্টারেস্টেড... অথচ সুদের হার টমেটোদের ভালোবাসে। তাদের গায়ে ফ্রিজ থেকে বের করার পর দানা দানা শিশিরের মতো ভালোবাসা। তারা বাচ্চাদের শিরশিরানির মতো কেঁপে ওঠে আর মহিলাদের মতো গোঙায়... দে আর নট ইন্টারেস্টেড - বলে ট্রেজারির তলায় অন্ধকারে চায় চাপা পড়তে।
সুদ আসলে এক সুগন্ধি ফুল, যা আদর পেলে ডাগর হয়ে ওঠে; যেমন টমেটোরা একসময় লাভ আপেল। প্যারিসের সন্ধ্যেয় তাদের পাশে আলো ঠিকরে দাঁড়িয়ে থাকে ওয়াইন গ্লাস, পাশে মাল্টিব্যাগার ফুল, বাজারে যার চাহিদা প্রভূত, ডিনার টেবিলে ক্যাণ্ডেললাইট।
শিরশিরানি এক অসুখ, ছোটো থেকে বড় হলে যা ইউলিটির কার্ভের মতো বাড়েনির্দিষ্ট সময়াবধি। টমেটোর জীবনকালও তা'ই। আদতে ডিমিনিশিং। প্যারিসের ছাঁচে বন্দী থাকে সুঘ্রাণ, তার রঙ সাদা, সততই। মৃত্যুর রঙ সাদা, বরফেরও। শিশিরও জমাট বাঁধলে তাই'ই। বেণীআসহকলা...!!! আফটারল হু আর ইন্টারেস্টেড ইন লিভিং?
১৯
বেদরদি চাঁদ ওঠে টমেটোর পাতায়, তার বোঁটায় ঝকঝক করছে পলিশড দাঁত। পোকার খেলতে খেলতে ক্লান্ত হয়েছে যে পুরুষটি, তাকিয়ে আছে টমেটোর দিকে খুলে আম, নির্লজ্জ, যেন মহিলার কণ্ঠার কাছে দীঘল ক্ষত নিয়ে বসে আছে বেশুমার গজল, পোষা বেড়ালের মতো।
আর আলাপ। মশগুল হয়ে আছে পোকা আর পোকারে, আলো ও নরমে, সাথে দু'দণ্ড ফিচলামি, কিছুটা প্রণয়নক্সা। যেন জমেছে ব্লু-বেরি, অন্ধকার রঙের, টমেটোগাছেই। চাইনিজ চেকারের ঘুটির মতো পথ, পথিক বিমর্ষ, নেই সরাইখানাও ধারেকাছে।
তবু সিদ্ধান্ত দীঘল। তা বীজ থেকে পাল্প হয়ে সোজা স্কিন... মাংস কুঁচকানো, বয়স সাতষট্টি, দরদহীন, লিঙ্গ অজানা। সিদ্ধান্ত একাকী। টমেটোর পাশে তার কোনো দল নেই, ক্ষত নেই, আছে পোকার বোর্ডের শেষে ফলাফল। কর্মই আসল কর্তা। টমেটোরা জানে চাঁদের আলো আদতে ফিচেল, প্রগলভ। বস্তুত, তার সিদ্ধান্ত নেই কোনো।
২০
আর দাস্তান লেগে থাকে... অসুখের গোড়ায় নীল নীল পাতা, আকাশি টমেটো... ছায়ার গায়ে বাদামি মেয়েদের চলাচল। যেন খুব ভোরে নিয়ে গেছে আলো, কোনো অন্ধ। যেন খুব খিদে নিয়ে ভেঙেছে টেবিল বিবাদে, বিশদে হয়েছে লেখা টমেটোর ক্ষুধা, কাঁটার ওপর।
বস্ত্রতন্ত্র... খালি তার শরীরের ওপর পোকা অগুনতি, শিরা লোহার, ধমনীতে টগবগ করে ওঠে টমেটো খানিক, যেন বিপ্লব যায় আনবাড়ি আর যৌনতা ঢেকেঢুকে রাখে। ভেঙে ওঠে বিষাদদানি যেন কলরব, প্রতিটা পাখির ঠোঁট থেকে জলবায়ু কথা বলে তহবিলের, টমেটোর ভেতর... আকাশি টেবিল, ক্লথ লাল, তসবির ছিটিয়ে আছে টমেটোর গায়ে...
শুধু বিষণ্ণ দাস্তান পড়ে থাকে টমেটোশহরে, বৃষ্টি ভিজে যায় আনবাড়ি কানায়, আর ক্ষুধা জমে টমেটোর ত্বকে।
0 মন্তব্যসমূহ
মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।