মোক্ষ পর্ব
১০.
এই উপবৃত্তের নাভিতে সূর্যের অবস্থান—
কখনও ঠোঁট ছুঁয়ে
কখনও যোনি ছুঁয়ে
আমি আবর্তন করি, করতে করতে...
রসাতল থেকে তুলে আনি হিরণময় বাটিতে ঢাকা সত্যবস্তু!
ধীন রূপ আধ্যাত্মিক স্পর্শ থেকে
তা রূপ জাগতিক স্পর্শে অন্তর্লীন আমার বীর্য
আকাশে ছুঁড়ে দেয় প্রিয় অনুভূতিদের উহুআহা!!
১১.
ঘুমের মধ্যে কিছু কিছু চেতনা থাকে মৃত্যুর,
প্রাণপণ চেষ্টায় সেই মৃত্যু থেকে ঘুমে ফেরা—
ঘুম থেকে আবার মৃত্যু (?)
ঘেমে ওঠে ভয়, ভাস্কর রূপে বিছানা কামড়ায়—
আরও তীব্রভাবে বেঁচে ওঠার ইচ্ছে আরও
দেয়ালের কানে অথবা নির্বাসিত নারীর কাছে
কতটা প্রচারে লেখা থাকে— কারা কারা ইস্পাত (?)
তবুও গুটি গুটি ঢুকে পড়ে বহুতল কন্দর
অ্যাপ্রিকট চুয়ে দুধ ঝরে.... আহা! লালাস্রাব যেন
স্নানপাখিদের টার্মিনাসে জোনাকি খোঁজার চেষ্টায়
ধীরে ধীরে শরীরে ঢালি ঘি, রক্তখসা তারা
আমাদের সাভানা বেল্ট উড়ে যায় হার্বিভোরাস
১২.
পাথরের গায়ে উপোসগুলোকে ঘাস হতে দেখে
ভীষন খিদে খিদে লোভ জেগে ওঠে বিটপের মনে
শহরপোড়া সৌরভ ছেয়ে যায় কুয়াশাগ্রামে
ধাপ করে চষা বমিবমিভাব। ওভারহেডের তারে
দার্শনিকের উল ও বৈজ্ঞানিকের ফুল নিয়ে ছুটছি
বিশ্লেষিত প্রেম হাঁপাচ্ছে ভেক ধরে লজ্জার।
পিউবিক হেয়ার চেঁছে নিয়ে যোনিদ্বার ঘেঁষে দেখি
শীতকাল নেমে আসে নিঃশব্দে, নতুন হাড়ে
— নিভৃত নিশ্চিন্ত ঘুম এখন সাপ-লুডো খেলা।
একটু সরে এসো প্রিয় দ্বিচারিতা, আরেকটু!
দূর মাসুলিপতনামে ফুটে উঠছে কলমকরীর রূপ
সূক্ষ্ম মাধুর্যতায়, দেখবে এসো
লিখে রেখেছি কবিতার বাউন্ডুলে রিভিউ!
১৩.
পড়ন্ত দুপুরের গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠো
ধুয়ে ফ্যালো মাকড়সার জালে পোড়া বাজি।
দ্যাখো বয়সের গাছে পাথর ঝুলছে আমার
আঁধার নম্বর আমি রেখেছি
মোলাস্কা পর্বের ধাঁধানো শিশিতে;
আর পকেটের রঙে রেখেছি
—গর্বনিরোধক ও সুদ।
একরাত রোদ্দুর ঢেলে শিল্পে ও পিপাসায়
দুরন্ত ঈগলের উন্মুক্ত ধমনী, ছায়া মাখামাখি।
মশাছাপা আঙুলে বিকেল কুড়িয়ে পাওয়ার মতো
কান্ড বিদীর্ণ করে দাও সেলুলোজ,
আবেগের কথা আর বোলো না আমায়
আবগারি কর মুকুব আমার।
আমার সারা ঘরে শুধু নৃত্য-যোনির ছোপ
১৪.
উড়ন্ত কার্বন ওঠে অরুণাচলের বুকে
বাঙাল ডাঁটার ভোর উড়ে যায়
সমস্ত ধানক্ষেত ও সোনার খাঁচায়
আমাদের তন্তুপ্রান ঢেকে রাখো।
—এই তো ঘর, ঘরের ভিতর
জনাকীর্ণ গামছা বেয়ে নেমে আসুক স্পন্দন
মেয়েদের পায়ে বাজুক নেশার চাঁদ-তারা!
ঘড়ির হাতে জমা থাক দাম্পত্যজীবন
অথবা দাঁত
খিঁচিয়ে হাত এবং পা নাড়াবার
প্রবল চেষ্টায় ব্যর্থ কাউকে ডাকো। ডাকবার তাড়নায়
পাথর হয়ে নেমে যাক
নেড়ে দেওয়া ভুল, ঝরে পড়া ঘাম, স্বপ্নেভরা খুশকি!
গতিতে অ্যাসপিরিন ছুঁতে চাওয়া
পুরুষ মৌমাছি এবং ড্রোন।
১৫.
নখাগ্রে ব্রহ্মাণ্ড তুলে অখ্যাতনামা প্রহেলিকা
সাজিয়ে রাখে আরামের ঘুম, এক টুকরো অক্সিজেন
এই সুখসৌপ্তিক ইনসমনিয়া..!
এসো, আমার প্রানে এসো, ওগো হৃদয়চড়া
তোমার ভিওলি ভরে দিই সন্দেশে, ডট্ ডট্ ফুলেল মোজায়!
নির্মিত সুখ, রুমাল বৃষ্টি, চাঁদোয়ার দোলে লাগাও উল্লাস
ফোনকেলিতেই পদাবলি আঁকো চিমটি কথার টিউলিপ।
কয়েকশো একর জমি ছুটে এসো
ঝুঁকে এসো ঝাউফল...
এসো, পিট্যুইটারির দম বন্ধ হবার জোগাড়!
সৌরভ বর্ধন। কবি ও গদ্যকার। পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার শান্তিপুরে জন্মগ্রহণ ও বসবাস। ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় কবির প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘নিজস্ব প্রতিবেদন’। এছাড়াও ‘জলবিভাজিকা’ (২০১৮) এবং ‘স্তন ও হৃৎপিণ্ড’ (২০১৯)। সাম্প্রতিকতম কবিতাগ্রন্থ ‘প্রসূতিকালীন পাঠ’ ২০২০ সালের বইমেলায় ‘কবিতা পাক্ষিক’ থেকে প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্টেড পত্রিকায় অনিয়মিত লেখেন। লেখায় চৈতন্যপ্রাপ্তিই হলো তার উদ্দেশ্য ও বিধেয়।
2 মন্তব্যসমূহ
"দার্শনিকের উল ও বৈজ্ঞানিকের ফুল নিয়ে ছুটছি" - কী এক্টা অবস্থা?? তবে ভাল লেগেছে। এই কবির আরো লেখা আর.কে.রোড. ম্যাগাজিনে দেখতে চাই। সম্পাদকের মনোযোগ আকর্ষণ করছি।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ। 'চিঁহিঁফেকশন' একটি কবিতা সিরিজ ধারাবাহিক প্রকাশ শুরু হয়েছে আর.কে.রোডে প্রতি রবিবার। পড়বার আমন্ত্রণ রইলো আপনার। ভালো থাকবেন।
মুছুনমন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।