TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

পরিব্রাজক চিহ্নের ভূমিকা ও নির্বাচিত পনেরোটি কবিতা | বাদল ধারা


পরিব্রাজক (~) চিহ্ন সম্পর্কিত ভূমিকা:

.....গাণিতিক প্রকাশ ভঙ্গিতে প্রায় আসন্ন মান (গুণ, অবস্থান বা সংখ্যা) বুঝাতে অ্যাপ্রক্সিমেট ( ~ ) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়,
যা ( ~ ) গাণিতিক ক্ষেত্র থেকে সরাসরি উড়ে এসে আমার কবিতার পঙক্তিতে পঙক্তিতে ডুবে গেছে এবং এর ( ~ ) বৈশিষ্ট্য ক্রমাগত পাল্টে গিয়ে বহুমাত্রিক হয়ে উঠেছে

এবং এই বহুমাত্রিক ( ~ ) এর, আমি নাম দিয়েছি পরিব্রাজক ( ~ )

পরিব্রাজক ( ~ ) আমাকে সকল সম্ভাবনার নিরন্তর গুপ্ত ও অগুপ্ত জগতে নিয়ে যায় আর পরিব্রাজক ( ~ ) ক্রমাগত হয়ে ওঠে নিরন্তর সময় ভ্রমণ, তাই আমার কাব্যে পরিব্রাজক ( ~ ) কোনো বিরামচিহ্ন নয়

পরিব্রাজক এ এসে আমি ন্যানো সেকেন্ডে পার হয়ে যেতে পারি এক জগৎ থেকে আর এক জগতে
ডুবে যেতে পারি নিরন্তর সময়ের পলে পলে, ঢুকে যেতে পারি বহুবিশ্বে, মহাজাগতিক বহুমাত্রিক দৃশ্য দৃশ্যে ~ দৃশ্যান্তরে, থেমে থাকতে পারি ইচ্ছে মতো

~

প্রিয় শূন্যতা, আমার বহুমাত্রিক জগতে স্বাগতম.....




পনেরোটি কবিতা


{ √মন্ত্র + অ : বাদল ধারা }

ষষ্+চক্র, ষষ্+শাস্ত্র, ষষ্+প্রজ্ঞা,
ষষ্+গুণ, ষষ্+গত, ষষ্+দুর্গ,
ষষ্+কর্ম, ষষ্+ অঙ্ঘ্রি, ষষ্+ভুজা
ষষ্+রিপু, ষষ্+রস, ষষ্+দশ,


                                 ↑      ↑
            ← ~ প্রতি + √ই + ঈক ~ →
                                 ↓      ↓


                    { √কম্ + অ (ঘঞ্) }

                               ঞ
                               ↑
                         ই ← → উ
                               ↓
                               ঙ

{ √লিঙ্গ্ + অ ( ঘঞ্) } → { √গুহ্ + অ + আ }


নিউট্রিনো

একটি বিজোড়ের বর্গ, কিংবা ~ দুটি বিজোড় সংখ্যার ~ যোগফল

একঝাঁক নিউট্রিনো, আমাকে ভেদ করে
তোমার হৃৎপিণ্ড ~ ছুঁয়ে আসলো,
উষ্ণতার রঙ মোহাচ্ছন্ন, ঘোরময়, মাতাল

মিউটেন্ট মন ~ সংগীতের সীমানা ছুঁয়ে, অসীমে, অতীন্দ্রিয়ে


সান্ধ্য সংখ্যা

বিষণ্ণতা প্রিয় ~ এক ~ বিষম ত্রিভুজ
দুই সমকোণ অতিক্রম করে → আত্মঘাতী প্রান্তে,

দুই
অথবা
তিন

কিংবা এর মাঝামাঝি, কোনো ~ সান্ধ্য সংখ্যা

ঋজু অধ্যুষিত প্রভাবক ~ মাদকতায় পরিপূর্ণ
অপার এই বিস্ময় ~ এই কাল্পনিক রেখা
তোমার, স্তন ছুঁয়ে ~ ভাষাহীন, নিদ্রাহীন


π : শূন্য দশমিক দুই

আপেক্ষিক তত্ত্ব ভেঙে যায়
তোমার স্তন মুদ্রা, নিতম্বের বাঁক ধরে ~ মাদক টানেল

শীতল নক্ষত্র × আগুন নিদ্রা
যোনি + শিশ্ন ≠ বিশৃঙ্খলতা

১৬ আনা পরিপূর্ণ,
আদিম দিনলিপি ~ আত্মহত্যা প্রবল নক্ষত্রের পাশে


π : শূন্য দশমিক পাঁচ 

10⁵⁰⁰

Ω < ১
Ω > ১
Ω = ১

পিরামিডের আয়তন = ১/৩ ( উচ্চতা × ভূমির ক্ষেত্রফল)

সময় ভ্রমণ
কোয়ান্টাম ক্যাট
স্তনে স্তনে ব্যাতিচার ~ সুর
অনিশ্চয়তার দিগদর্শন

এক ফার্মি মাদকতা

৫২

৭১

বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ১৯...


আবির্ভাব ইজ ইকুয়েল টু তিরোভাব...

শুঁয়োপোকা থেকে ~ প্রজাপতির ~ বিভাজন রেখায়
ঘুমিয়ে আছে ~ কিছু গুপ্ত জগৎ ~ বিস্মৃতি
মধ্যবর্তী টানেলের ~ দুই প্রান্তে ~ এক জীবনের দুই রূপ

উত্তর ও দক্ষিণ মেরু ~ বৈপরীত্য নয়, বরং
উত্তর ও দক্ষিণ মেরু নিয়েই ~ চুম্বক

বস্তু আগে, না চেতনা আগে ~ এই আগে
বা পরের দিকে যাচ্ছি না ~ যাচ্ছি, স্বপ্নের দিকে
সাদা ক্যানভাস জানেনা ~ কি মূর্ত ধারণ করবে

আবির্ভাব ইজ ইকুয়েল টু তিরোভাব ~
গণিত খাতায় ~ একটি কাক ~ ফিঙ্গের ডিমে তা'দেয়


মাতাল এক...

RNA এসে দিয়ে গেলো ~ DNA'র গোপন খবর
মাতাল, এক ~ হেটে যায়, বৃত্তের পরিধি ধরে
মুষলধারে বিড়ালের আঁচড় ~ কুকুরের নির্লিপ্ত চোখ

তিন সমস্ত সাত ভাগের এক ~ কতদূর যাবে সে


অতলান্ত বিন্দু

আঁধার থেকে ~ চন্দ্রবিন্দু ~ কেটে যাচ্ছে
গণিত জানা এক পতঙ্গ ~ রোজ উড়ে আসে
অতলান্ত এই ফাঁদ ~ সম্মোহন রেখা ঘিরে

ডিম্বাকৃতি কক্ষপথ ~ পাথর অরণ্য,
সৌর ক্যালেন্ডার ~ চন্দ্রাহত পাখি,
স্মৃতি এক ~ নিঝুম টানেল,

জটিল অথবা সরল ~ এই দুই, ক্রমাগত বিন্দু হয়ে যায়


নিউক্লিয়ার ফিউশান…

92 এর রাত থেকে U টার্ন নিয়ে ~ আমি পৌছে গালাম 235 এ
তীব্র ~ অন্তর ও বহির্মুখীতার ~ দ্বন্দ্ব
এক চোখ থেকে উড়ে যাচ্ছে ~ সোডিয়াম ক্লোরাইডের নিবিড় ~ নিবিড়তা
আর এক ~ চোখ থেকে ~ বের হয়ে আসলো
বিপুল ~ বিপুল পরিমাণ ~ নিউক্লিয়ার ফিউশান

আকাশ কাঁপিয়ে ~ এক নীল জোকার ~ হাসে ~ আপেক্ষিক হাসি

তীব্র উন্মাদ মুহূর্তের ~ অন্তর থেকে ~ বের হয়ে আসছে ~ গৌতম
ক্যাডমিয়াম চকলেট ~ খেতে খেতে

এক জোড়া স্থীর ~ নীল পা ~ কিংকর্তব্যবিমূঢ়
চোখ জুড়ে ক্রমাগত ~ নেমে আসে ~ অনন্ত আঁধার


তিনটি সুতীক্ষ্ণ আইসোবারতীর...

একটি নিঝুম এলিমেন্টস থেকে প্রতি রাতে ~ পঞ্চম স্বীকার্য ~ ডানা মেলে
নীল লিবিডো বুদ্ বুদ্ ~বের হয়ে আসে ~ রাত্রির গহ্বর থেকে
স্ট্রিং এ অগ্নিনৃত্য ~ কামশাস্ত্রে ~ উঁইপোকার চোরারাস্তা
তিনটি সুতীক্ষ্ণ আইসোবার তীর ~ আমাকেই ~ ভালোবাসে
স্বপ্নের চোখে আমি বসিয়ে দিয়েছি ~লাল সমুদ্র ~ কপালে ~ নীল আকাশ
দশটি মসৃণ নখর ~ জ্যোৎস্নার মতো জ্বলজ্বল করে
তীব্র হিম ~ হিম ~ আঁচর কেটে যায়

খনিজ বেদনা ~ কী কারণে ~ জেগে উঠতে চায়


সোনালীহলুদ → NaCl ...

আয়নিক বন্ধন থেকে ~ একটি ইলেকট্রন ~ হ্যাক হয়ে গেলে
এক জোড়া পাখি ~ একা হয়ে যায়
একটি পাখি ~ ধীরে ধীরে ~ অস্তিত্ব হারায়
ক্রমাগত স্বপ্নের বায়ুমণ্ডল ~ নুনহীন ~ নুনহীন হয়ে ওঠে

প্রেমদাসকে ~ লবণ পরীক্ষায় কত মার্ক ~ দেওয়া যায়

অন্তর্মুখী ভাবনায়
ডুবতে
ডুবতে
আমার হট কেক ~ নুনশূন্য ~ নুনশূন্য হয়ে উড়ে যাচ্ছে


শূন্য অথবা এক অথবা শূন্য...

০.০৪ + ০.২৩ + ০.৭৩ = ১

১ খুব গুরুত্বপূর্ণ ~ আর ১ এর অস্তিত্বের পূর্বশর্ত ০
০ আরো গুরুত্বপূর্ণ ~ কারণ ১ এর আদি ও শেষ পরিণতি ০
তাই ~ প্রার্থনা ০ জেনেও
১ দাঁড়িয়ে থাকে ~ কার প্রতীক্ষায়

১ ক্রমাগত ০
০ হয়ে যাচ্ছে

হে শূন্য প্রার্থনা ~ শূন্যগহ্বর থেকে ~ বের হয়ে আসছে
আমার পোষা ~ ইঁদুর ~ বিড়াল ~ ও ~ সবুজ টিয়া...


কার্বনরেণু...

আমার সমস্ত, প্রেম ~ কার্বনডাইঅক্সাইড ~ হয়ে
উড়ে যাচ্ছে ~ অনন্তের দিকে

সমস্ত ব্ল্যাকহোলের নেশা ~ নেশা নেশা ঘুম ~ জমে উঠছে চোখে

আমার প্রতিটি কোষ থেকে প্রতিনিয়ত ~ উড়ে যাচ্ছে হিগস্
নিউরনের সিন্যাপাসের কার্নিশ ধরে ~ বইয়ে যাচ্ছে
অন্য এক ~ অন্য এক, উন্মাদনা

একটি সোনালী কম্পাসের ~ নীল তীর
ভুল তেজস্ক্রিয়ায়, পুড়ে পুড়ে ~ আমাকেই আবিস্কার করে
আমি পুড়ে আছি ~ কার্বন ~ কার্বন রেণু হয়ে আছি
অসীম, অমীমাংসিত, কলংকের দাগ ~ দাগ হয়ে আছি
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের হৃৎপিন্ডে ~ তোমাতে ~ প্রেমে


পরিব্রাজক...

আমার বহুমাত্রিক স্পেইসশিপে ~ ক্রমাগত জমে উঠছে ~ বিষণ্ণ রঙ

দীর্ঘ হিম নিদ্রার কোমায় ~ আটকে পড়ে আছে ~ আমার দেহ

বিষণ্ণ সম্পাদ্য
সন্ধ্যার ষড়যন্ত্র
সাইকি পারফিউম ~ এই তিন
এই তিন রঙের ~ আঁধার আঁধারে ~ ডুবে যাচ্ছে আমার ~ শরীর
আমার শরীর ~ ক্রমাগত ভর শূন্য ~ ভর শূন্য ~ হয়ে উঠছে

আমি একই সঙ্গে মর্ত্যে ও শূন্যে ~ নিরন্তর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্রে ~ নিঃসীম অসীম অসীমে

এক

এক
মহাজাগতিক সুর ~ ধীরে ধীরে ~ সুড়ঙ্গ হয়ে উঠছে
ধীরে ধীরে অতিক্রান্ত দূরত্ব ~ শূন্য শূন্য হয়ে যাচ্ছে

আমার বহুমাত্রিক ~ স্পেইসশিপ ~ যার নাম ~ পরিব্রাজক
পরিব্রাজক কি ~ আমাকে জাগাতে পারবে ~ এই ঘুমন্ত জাগরণ থেকে
এই হিম হিম ~ হিম নিদ্রার ~ নিঝুম টানেল থেকে

আমার অবচেতন উপলব্ধি ~ আরো গাঢ় ~ প্রবল হয়ে উঠছে
আমি শুনতে পারছি ~ হরিৎ ~ হরিৎ বর্ণের কাঠপেন্সিল ~ স্পন্দন


হরিৎ বর্ণের কাঠপেন্সিল...

এক হরিৎ বর্ণের কাঠপেন্সিল ~ ইন্দ্রিয় ভ্রমণে ~ পৌঁছে গেল
বন্য জ্যোৎস্নার ~ তেপান্তরে

ফসিল বাস্তবতায় ~ দুটি পেঁচার ~ গম্ভীর ~ কথোপকথন
পালকের আসর থেকে ঝরে পড়া
একটি পালকে ~ মিশে ছিল ~ ইতিহাস পারফিউম
তখনও ফলের রসায়ন প্রবাহিত হয়নি ~ পেন্সিল বৃক্ষে
বসন্ত ছিল ~ মাইল খানেক ~ দূরে

ইলেকট্রিক করাতের ~ গর্জনে
ছিটকে পড়লো ~ যে নীড়টি ~ তার মাঝে লুকিয়ে ছিল ~ একজোড়া আকাশ
আকাশ দুটি ~ ভেঙে পড়লো ~ উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে ~ বিমর্ষ গোধূলি নিয়ে
একঝাঁক ~ জংলী পিঁপড়াকে ~ বাতাস এসে ~ দিয়ে গেলো ~ এইসব খবর

খনি ছিঁড়ে যখন ~ কার্বন রেণু ~ সরল হয়ে ঢুকে গেলো ~ পেন্সিলের দেহে
তখনই বোধি প্রাপ্ত ~ গৌতমসম ~ হয়ে উঠলো ~ কাঠপেন্সিল
সঙ্গী হলো ~ সার্পনার ও ইরেজার

আর তখন থেকে ~ তাদের সম্পর্কের মাঝে ~ ঝুলে আছে ~ একটি বিষমবাহু

ত্রিভুজ

সময় ঋণাত্মক ~ হতে হতে ~ আমিও কি ~ ঢুকে পড়েছি ~ সবুজ আঁধারে...



বাদল ধারা। কবি।
জন্ম১৮ মে ১৯৮৫, ঢাকা। 
প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ দুইটি ‘শূন্যতার সার্কেল’ (২০১৭), ‘তিন সমস্ত সাত ভাগের এক’ (২০২০)।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

5 মন্তব্যসমূহ

  1. বিজ্ঞান ও কাব্যকলার সমন্বয়ে এক স্বতন্ত্র জগৎ

    উত্তরমুছুন
  2. কবি বাদল ধারা বিজ্ঞান ও কাব্যকলার সমন্বয়ে নিজস্ব ধারার স্বতন্ত্র এক কাব্য জগত সৃষ্টি করেছেন।কবি বাদল ধারার ভিন্ন ধারার এ কাব্য জগতের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব এক দশক আগে থেকে কবিতাপত্র এবং অন্যান্য লিটলম্যাগের মাধ্যমে।যদিও আপনার "শূন্যতার সার্কেল" কাব্য ২০১৭ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে।বিজ্ঞানমনষ্ক এ কবিতাগুলো সাহিত্যে নতুন পালক যুক্ত করেছে।আপনার কবিতা বিজ্ঞান এবং কাব্যকলার কাব্যবোধে এবং কাব্যিকতায় অনন্য হয়ে উঠেছে।আপনার কবিতাগুলো স্বতন্ত্র এক স্বর।আরেকটি কারনে আপনার কবিতা অন্য সকলের থেকে স্বতন্ত্র।সেটা হলো পরিব্রাজক চিহ্নের ব্যবহার।যা কবিতার ভিতর অনন্ত,অসীম এক ভাবনার জগত সৃষ্টি করেছে।জলনুপুরে কাব্য কলা আর কাব্যিকতা কাব্য বোধের জানালায় ক'গুচ্ছ পেখম গুঁজে দিয়ে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে থেকে ডেকে যাচ্ছে।💚

    উত্তরমুছুন
  3. বা! অভিনব, অভাবনীয়, সুস্বাদু, মনোহর৷ এক অন্য স্বাদের ভিন্ন জগতের সাথে পরিচিত করিয়ে দেবার জন্য কবিকে সাধুবাদ জানাই৷

    উত্তরমুছুন
  4. বাদল ধারা বাংলা কবিতায়। নতুন সুর ও মাত্রা নিয়ে এসেছেন।

    উত্তরমুছুন

মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।