১
ওরা আমাকে খেতে চায়।
আমার চোখ ও চিবুক ,
ঠোঁটের ওঠানামা,
বেশিরভাগ কখনো কখনো আঙুলের ইশারা।
আমি ওদেরকে নির্বিঘ্নে খেতে দিতে চাই না।
বলি, যথেষ্ট চিবিয়ে খাও আমাকে।
ওরা আমার বন্ধু।
ওদের অনেকের শক্ত দাঁত নেই।
২
ব্রেইনকে বললাম, আমার হিসু পেয়েছে।
ব্রেইন বললো - 'রাষ্ট্রীয় অনুমতি নেই'।
তোমার ঠোঁট বরাবর ঢিল ছুঁড়বো -
অতোটা অসভ্য আমি নই।
বড়জোর চুমু ছুঁড়তে পারি - যদি চাও।
এই যে রাস্তার ফুটপাত - যেটা অর্ধেকটা ঢুকে গেছে কুমিরের পেটে -
বাকি অর্ধেকের পেটে কুমির ঢুকে গেছে, আমি দেখতে পাই।
কেন আমরা, অতএব, নগরের উপকণ্ঠে বানাতে চাই তোমার মনুমেন্ট?
আমি তোমার মনুমেন্টের সাথে
বলিষ্ঠ একটা সঙ্গম করতে চাই।
রাষ্ট্র বললো - 'অনুমতি নেই'।
৩
সেপ্টেম্বরে তারা মেতে ওঠে উৎসবে।
হাওয়া বদল হয়।
কিছু ফুল ঝরে, কিছু ফুল
ফুটবে বলে অপেক্ষা করে।
ফুল বিষয়ে তাদের আগ্রহ দেখা যায় না।
হাওয়া বিষয়ে উদাসীনতা তাদের।
আমি মায়ের কথা বলতে গিয়ে লজ্জা পাই -
সবকিছুই তারা কিনে নিতে চাই, জেনে।
সেপ্টেম্বরে তারা উৎসবে মেতে ওঠে।
আর আমি শোকাহত হই।
৪
তারুণ্যে জ্বলে উঠতে চাইছে হাতের তালু,
চকচক করে উঠছে কপালের ঘাম।
আমাকে ফেরাবে তুমি -
বলেছিলে।
ফেরাওনি।
আমি এখন এই হাত কোথায় রাখি!
চোখের জিহ্বা, জিহ্বার ঠোঁট
কোথায় রাখি!
মাতামুহুরির জল
আমার জন্যে নয়। লালনীল আলোর শহর
আমার জন্যে নয়।
রাতের পাহাদার আমি।
রোজ রাতে, এখানে, আমার রাত
চুরি হয় , লুট হয় আমি সমেত।
আমার এই খামোশ বসে থাকা
কোথায় রাখি!
তারুণ্যে জলে উঠছে হাতের তালু।
বুকে জমছে ফোঁটাফোঁটা রূপালী ঘাম।
ফসল ফলানো দিনে
বলেছিলে ডেকে নেবে একা।
ডেকে নাও তবে!
৫
তুমি চলে গেলে আমি দেউলিয়া হই;
লুটপাট হয়ে যায় সর্বস্ব, জমানো সোনা।
ছেঁড়া বসনের এক উদ্ভ্রান্ত প্রেমিক
অথবা পাগল - হেঁটে যায় দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে।
তুমি চলে গেলে আমি যাকে-তাকে জাপটে ধরে
বলতে থাকি ছোট একটি রক্তজবার কথা ;
ছেঁড়া তার বোঁটা হতে চুইয়ে পড়া লালরঙা প্রেমের কথা।
বেখেয়ালে হারিয়ে ফেলি চেনাজানা পথ,
পথে পথে পথ খুঁজে কিছুতেই পাই না হদিস -
মাতালের বাড়ির ঠিকানা।
তুমি চলে গেলে আমি মাতাল হয়ে যাই।
সন্দেহ দানা বাঁধে - যার-তার দিকে।
যাকে দেখি, মনে হয় -
সকলেই চোর, সকলেই চোরের মুরিদ।
তুমি চলে গেলে কি-বা হাত-বেহাত হয়ে গেলে
আমাকে পাই না খুঁজে!
হাসনাত নাগাসাকি। কবি।
জন্ম এপ্রিল ১৯৮৩, নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায়।
প্রকাশিত বই: 'সঙবিধিমুক্ত সতর্কী' (কবিতাগ্রন্থ)।
জন্ম এপ্রিল ১৯৮৩, নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায়।
প্রকাশিত বই: 'সঙবিধিমুক্ত সতর্কী' (কবিতাগ্রন্থ)।
1 মন্তব্যসমূহ
তুমি চলে গেলে কি-বা হাত-বেহাত হয়ে গেলে
উত্তরমুছুনআমাকে পাই না খুঁজে!,-- মুগ্ধ হলাম
মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।