TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

সিদ্দিক প্রামাণিক-এর গুচ্ছকবিতা


খোঁয়াড়

মহান শিল্পপতি এক কবির সাথে
অবসরপ্রাপ্ত এক আমলা কবির গলায় গলায়
পিরিত হলে- উভয়ে জাবর কাটে-
সন্ধ্যার খোঁয়াড়ে বসে

কতিপয় ভাঁড় আর মোসাহেব
দেখে দেখে আনন্দে হাততালি দেয়।
পথচলা লোকেরাও হাসাহাসি করে-
সুদখোর ইউনুস এদেশে  মহাজন হলে-
ন্যাংটা পাগলও তবে পীর-এ কামেল


বিড়াল

তিনতলার ফ্ল্যাটে থাকেন যে আমলা,
তার মেয়ে সখ করে বিড়ালে পোষে।
বিড়ালের নাম মেনি।
দুধকলা খায়, মাছ ভাতও প্রিয়।
কিছুই না-বলে একদিন হঠাৎ হারিয়ে গেল
প্রহরী খুঁজে খুঁজে হয়রান হলো খুব।

তুলতুলে কয়েকটি বাচ্চাসহ
আড়াই মাস পরে আবার ফিরে এলো ফ্ল্যাটে
বাচ্চাগুলো অবিকল বস্তিবাসী- হুলো বিড়ালের মতো
সাদা রঙের ব্যঘ্র স্বভাব


অহিংস

অহিংসের কথা শুনলেই মনে হয়- ক্ষ্যাপা
আর বুনো এক মোষের সামনে খালি হাতে
দাঁড়িয়ে আছি একা।

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হলো কাল।
মসজিদ ভাঙলো হনুমানের দল, আর
তাতেই ভেঙে পড়লো শত শত নিরিহ মন্দির

রেপ আর রক্তে নেতিয়ে পড়া রাতের মতো
বুদ্ধের চোখও ঝাপসা, ক্লান্ত এখন


নায়ক

অমলকান্তি আমারও বন্ধু।
রোদ্দুর না,
সিনেমার নায়ক হতে চেয়েছিল সে।

মফস্বল পালিয়ে ঢাকা গেলেই গার্মেন্টস,
রিক্সার প্যাডেলে পা রেখে স্টেশন; দালালের
হাত ধরে একদিন
হুট করে ঢুকে গেলো সিনেমাপাড়ায়

অমলকান্তি এখনো নায়ক হতে পারেনি।
নায়িকাদের মাথায়-
ছাতা ধরার কাজটাই শুধু কপালে জুটেছে তার


লম্পট বাঁশি

পাবলিক টয়লেট উদ্বোধন হতে না-হতেই
যারা রবীন্দ্র মঞ্চে- হয়ে ওঠে শিল্পের বিদগ্ধ
সমালোচক।

তারাও জানে- বামনের গায়ে
কখনো মানাবে না রাজার পোষাক!

দেখে শুনে মুখ লুকায় মুখচোরা পাখি,
অকারণে ঢেউ গোনে অকর্মার দল।
রাত ভারী হলে- প্রেমিক রাখালও বাজায়
একালের লম্পট বাঁশি



সিদ্দিক প্রামাণিক। কবি।
জম্ম  ২১ আগস্ট ১৯৭৯, কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী, চরভবানীপুর গ্রামে। বাংলা সাহিত্যে  স্নাতকোত্তর শেষে বেসরকারী সংস্থায় কর্মরত। প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ ৫টি: 'হাঙরের সমুদ্রে মননশীল মাছ’, 'উন্মাদের কনসাট’, 'মাতাল মিউজিকে বেসুরো নাচের মুদ্রা’, 'বাতিল বেশ্যার ডায়েরি’ ও 'শরীরেও হারমোনিয়াম থাকে’। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।