সহাবস্থান
ছপছপে জলভরা মাঠে
হেঁটে বেড়াচ্ছে একঝাঁক সাদা বক।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে দু'বন্ধু
মুগ্ধতায় তাকিয়ে একজন—
হলদে ঠোঁট আর সাদা পালকের প্রেমে বিহ্বল...
অন্যজন ভাবছে—
একটা বন্দুক থাকত যদি...
ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত এক আসামির শেষ ইচ্ছা
ফাঁসিমঞ্চ তৈরি
একটু পরেই সব আয়োজন
হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে
শরীর হালকা হবে, নির্ভার—
ভাবতে ভাবতে ফুরায় রাত।
একটু পরেই চলে যাব
যাবার আগে শেষবারের মতো খাব
বীজসহ একটি জলপাই।
তারপর সেমিট্রিতে দীর্ঘ ঘুম...
আর জাগব না
জাগবে একটি গাছ
বড়ো হবে
ছায়া দেবে—
জলপাই চোখে দেখব রোজ
কত পাখির আসা-যাওয়া
ঠোঁটে আর পালকে
মিসিসিপির জল-হাওয়া...
[*১৫ মার্চ ১৯৬৩ সালে এক হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আমেরিকান মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি ভিক্টর ফেগুইর। মৃত্যুর পূর্বে তিনি বীজসহ একটি জলপাই খাওয়ার শেষ ইচ্ছা পোষণ করেন।]
গাঁদাবাগান
বাড়ির পুবদিকে সূর্যের প্রথম আলো পড়া মাটিতে
গাঁদা ফুলের বাগান ছিল।
কত মানুষ আসতো, সময় কাটাতো
যাবার আগে ছবি তুলে নিয়ে যেত।
একদিন ঢোঁড়া সাপ দেখা গেলে রটে যায় গোখরা।
গাঁদাবাগান হয়ে ওঠে ভয়ানক জঙ্গল!
পরদিন কেটেছেঁটে সব সাফ, পুড়িয়ে ভস্ম।
বিরান শ্মশান...
এত বছর পরেও আব্বাকে দেখি আলমারি থেকে
বের করে মুছে রাখে ইয়াশিকা ক্যামেরা।
সেই বাগানের মৌমাছি, প্রজাপতি, খয়েরি-হলুদ গাঁদা
আজও বেঁচে আছে পুরোনো ফিল্মের নেগেটিভ কৌটায়।
0 মন্তব্যসমূহ
মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।