TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

নিষিদ্ধপল্লীতে একরাতের পোর্ট্রেট | সৌর শাইন


বেশ কদিন থেকে মনটা ছটফট করছিল পাতিহাঁসের ছানার মতো। চরম বিরক্তিতে গল্পের খাতা ছিঁড়ে ফেললাম, যে-লেখা অগ্রসর হয় না, তা রেখে লাভ কী! কী লিখব? সে-প্রশ্নটা বার বার মগজের ভেতর জেগে উঠছিল কার্তিকের দিনে মাথা তোলা হাওরের আলের মতো। কোনো যৌক্তিক উত্তর খুঁজে পাইনি। সিগারেটের ধোঁয়া নিয়ে খেলতে খেলতে ফুরিয়ে যায় রাত। দিন যাচ্ছে ছন্দহীন ছন্দে!

সেদিন সারাদিন ভার্সিটি ক্যাম্পাসে আড্ডা শেষে রোডের পাশে বেঞ্চে শুয়ে পড়লাম। শরতের রাত। চাঁদবিহীন তারকারাজি আকাশে! জমিনে মশাদের মিছিল, চারপাশে প্যাঁন প্যাঁন মিউজিক। যে-মিউজিক বন্ধ করার নাম করে অনায়াসে পকেট ভরেছে মহামান্য নগরপিতা। এদিকে কামড়ে ধরেছে আমার পুরো শরীর ঘিরে। অনুভূতি চক্রকে বাক্সবন্দি করে পাতালে ছুঁড়ে অনায়াসে ঘুমিয়ে পড়লাম। তখন রাত সম্ভবত বারোটা। কেউ আমাকে ডাকছে।

—সৌরিদম, এই সৌরিদম

চোখ না মেলেই বুঝতে পারি, ওটা সাজ্জাদের কণ্ঠস্বর।

—কী রে, রাতে কিছু খেয়েছিস?
—পকেটে পয়সা নেই।
—চল, আমার সাথে খাবি।

কিছু না ভেবেই সাজ্জাদের সাথে রিকশায় উঠলাম। ভার্সিটি ভর্তি কোচিং থেকে ওর সাথে আমার বন্ধুত্ব। বলা চলে, সিগারেট পিপাসু হওয়াতে আমাদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া, বন্ধুত্বও সুদৃঢ়। তারপর কতকাল কেটে গেল। ভার্সিটি হলে গণরুমে এক বছর কাটালাম। লেখার নেশার সাথে ছবি আঁকার নেশা মাথায় চাপে, আর চারুকলার বন্ধুদের সাথে মিশে ডিপার্টমেন্টে যাওয়া একেবারে ভুলেই গেলাম। সোস্যালিস্ট ঘরানার ম্যাগাজিনে আমার একটা প্রতিবাদি লেখা প্রকাশের সুবাদে সব উল্টে গেল। ছন্দে এলো মহাপতন! তবু উল্টোপথেই ছুটছি। ইস্যুটা ছিলো কারেন্ট পলিটিক্যাল ক্রাইসিস। শত্রুদের কাছে এতেই আমি ফেঁসে যাই চরমভাবে। হলের সিনিয়র ভাইদের হুমকিতে সিট ছাড়তে বাধ্য হই। তারপর ভার্সিটির পড়াশোনা আকাশে উড়াল দিলো।

চাঁনখারপুর মিতালী রেস্টুরেন্টে সাজ্জাদ আমাকে মোরগ-পোলাও খাওয়ালো। চোখ বন্ধ করেই উদরে চালান দিলাম।

—কী রে এখন কোথায় যাবি?
—কোথায় আর যাব? মেডিকেলের আশপাশে শুয়ে পড়বো কোথাও।
—থাক, এভাবে শুয়ে পড়া লাগবে না। তুই বরং আমাদের সাথে চল।

আমি জিজ্ঞেসও করিনি সে কোথায় যাবে। কেবল মাথা নাড়লাম। আধাঘণ্টা পর সাজ্জাদের কলিগ কুনাল এলো। আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। আমরা তিনজন গাড়িতে উঠলাম। রাত হওয়াতে রাস্তায় যানজটের ছিঁটেফোঁটাও নেই। গাড়ি চলছে হাওয়াই জাহাজের মতো। এক সময় গাড়ি থামল।

বাসস্ট্যান্ড থেকে রিকশায় চড়ে আমরা তিনজন একটা চমৎকার বিল্ডিংয়ের পাশে নামলাম। সাজ্জাদের কথায় জানলাম, এই স্থানটা প্রসিদ্ধ নিষিদ্ধপল্লী! বেশ নামডাক এই হোটেলের। রাজনৈতিক নেতা ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীরা খায়েশ মেটাতে এখানকার চৌকাঠে প্রতিদিনই যাতায়াত করে।

আমার মনের ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে নিষিদ্ধপল্লী শব্দটি। যেখানে শরীর বিক্রি হয়, সময় বেঁধে, টাকার দরে। মনের ভেতর উঁকি দিলো রোমাঞ্চ ও কৌতূহল। নতুন ও অপরিচিত জায়গা আমার কাছে বরাবরই তৈরি করে ভালোলাগার ঢেউ। লেখার উপাদান খুঁজতে দৃষ্টিসীমা আলোর ভিড় থেকে অন্ধকারে যেতে চায়। অজস্র জিজ্ঞাসা পোকার মত কিলবিল করে হাতড়ে বেড়ায় চারদিক!

—সাজ্জাদ বলল, কী রে, চলবে নাকি?

আহামরি কিছু নয়। কুনালের হাতে ভদকার বোতল। ওটা দেখিয়েই সাজ্জাদের রহস্যভাব।

—হেসে বললাম, ওটা জিজ্ঞেস করার তো কারণ দেখি না.. দে!

ছয় তলা ভবন, চকচকে রঙ! গেইটের সিকিউরিটি চেকপোস্ট ডিঙিয়ে তিনজনই ভেতরে ঢুকলাম। সুরাইয়া সিতারা নামের এক আকর্ষণীয় মধ্যবয়স্ক মহিলা আমাদের অভিবাদন জানাল। অতিথি কক্ষে তিনটি কাপ-পিরিচে চা-নাস্তা এলো। কিন্তু আমার ওসবে আগ্রহ জাগেনি, পেটে মোরগ-পোলাও তখনও গড়াগড়ি খাচ্ছে। নরম সোফায় বসে গলার ভেতর ভদকা চালান করে দিলাম, বোতলের তলায় থাকা খানিকটা এগিয়ে দিলাম কুনালের দিকে। ওরা কথা গল্পে মশগুল! ভীষণ তন্দ্রা এসে জড়ো হতে থাকে আমার চোখজোড়ায়, মগজে অনেক খোয়াব জড়ো হয় ক্রমান্বয়ে, সিঁড়ির মতো। মনে হচ্ছিল আমি এখনো কোথাও বেঞ্চে শুয়ে আছি। কিংবা আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছি!

কারোর ডাকে চমকে উঠলাম। চোখ খুলতেই দেখি, ত্রিশ পঁয়ত্রিশ বছরের এক যুবক দাঁড়িয়ে আছে। মুখে হালকা দাঁড়ি। চোখে-মুখে দায়িত্ব পালনে কঠোর দায়বদ্ধতার ছাপ, যা না হলেই নয়!

—স্যার, আপনি তিনশো চার নম্বর রুমে।
—ওখানে কেন?
—স্যার, গিয়ে দেখুন না, ওখানে কী আছে, একেবারে খাসা, কাঁচা চকচকে।
—কী যাতা বলছ?
—যা তা নয় স্যার, সত্যি বলছি, কাঁচা মাল, মজা পাবেন।
—ওসব কথা রাখো। ওরা কোথায়?
—আপনার সাথে যারা এসেছিল তাদের কথা বলছেন?
—হ্যাঁ।
—ইনারা সব হিসেব মিটিয়ে রুমে ঢুকে পড়েছেন। হয়তো, ফুর্তিও শুরু করে দিয়েছেন। আপনার বিলও পে করে দিয়েছেন।
—সিগারেটে টান দিলাম। ‘হয়তো ফুর্তি’ শব্দ দুটো, বার বার কানে বিঁধতে থাকে।
—স্যার, আসেন আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।

ঝিমঝিম দুলছে মাথা। যুবকের কাঁধে খানিকটা ভর করে লিফটে চড়ে গেলাম তিনশো চার নম্বর রুমে। বিছানায় বসতে গিয়ে, একেবারে শুয়ে পড়লাম। মাথার উপর ফ্যান ঘুরছে, সাথে দুনিয়াটাও ঘুরছে। তন্দ্রা ঘন হলো। কতক্ষণ কেটে গেল জানিনে। হঠাৎ চোখে ও কপালে পানির ছটা লাগল। জেগে উঠলাম। বাইরে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। জানালা খোলা, বিছানায় অনবরত বৃষ্টির ঝাপটা আসছে। ঘড়িতে চোখ বুলালাম। রাত সোয়া তিনটা। ঘরে লাইট জ্বলছে মেঝেতে একটি মেয়ে বসে আছে। গায়ে কাঁচা হলুদ রঙের শাড়ি। আমাকে জেগে উঠতে দেখে ভয়ে সে কুঁকড়ে গেল খরগোশ ছানার মতো। চোখ জোড়া ফুলে-ফেঁপে আছে। ঘোর কাটতেই মনে পড়ল, আমি কোথায় আছি। ওয়াশরুমে গেলাম, ফ্রেশ হয়ে বেরোবার সময় ঘরটা অন্ধকার হয়ে গেল। লোডশেডিং! খাটে গিয়ে বসলাম। পকেট হাতড়ে আবিষ্কার করলাম, শেষ সম্বল একটি মাত্র সিগারেট, জ্বালিয়ে নিলাম।

মেয়েটা আগের মতো মেঝেতেই বসে আছে নিশ্চুপ। কড়িডোরে কেউ পায়চারি করছে। আমার আন্দাজ সঠিক প্রমাণ করে একটু পর সেই যুবকটি দরোজায় উঁকি দিলো, হাতে একটি মোমবাতি।

—ওখানে থেকেই বলল, মণি, মোমটা টেবিলে রাখো।

মেয়েটা একখণ্ড অনিচ্ছা নিয়ে উঠে গেল। মোমবাতিটা মণির হাতে দিতে দিতে যুবক ছেলেটি বলল, স্যার, কোনো খাবার-দাবার লাগলে বলবেন। আমি একটা টর্চের ব্যবস্থা করছি, আপাতত মোম ছাড়া কিছু জোগাড় করতে পারিনি। ঝড়ের কারণে আজকে কারেন্ট চলে গেল, জেনারেটরটাও নষ্ট হয়ে আছে। এমনি এই এরিয়াতে কারেন্ট যায় না।

যুবক ফিসফিসিয়ে যথেষ্ট কড়া স্বরে মেয়েটিকে বলল, ‘মাগি, এখনো গেস্টের কাছে যাসনি কেন? সিতারা মেমকে ডাকতে হবে নাকি? এবার ধরলে তোকে ছাড়বে না.. একেবারে কাবাব বানিয়ে ফেলবে।’

কথাগুলো ফিসফিসিয়ে বললেও অনায়াসে আমার কান অবধি চলে এলো। মেয়েটির অনিচ্ছা আমার কাছে স্পষ্ট। অনেক প্রশ্ন মনের ভেতর ডালপালা মেলে নানা দিকে ছড়াচ্ছে। যুবক ছেলেটি ঝনাৎ শব্দে দরোজা আটকে চলে গেল। মণি মোমবাতি নিয়ে এগোচ্ছে। অতিধীর লয়ে ওর পথচলা, শরতের রোদ ঝলমল আকাশভরা মেঘের মতো মন্থর! মোম হাতে ওকে অসাধারণ সুন্দর লাগছে। যেনো দেবী প্রতিমা! মুখমণ্ডল আলোয় হয়ে উঠেছে রক্তিম, গোধূলির মতো। ভ্রু জোড়া দিগন্ত রেখার মতো, কাজল আঁকা লাজুক চোখদুটো নিচে তাকিয়ে আছে। আর চোখের পাপড়ি আয়নার মতো। হালকা বাতাসের আক্রমণ থেকে মোমবাতিটা বাঁচতে চায়। অগ্নিরশ্মির আঁকাবাকা রূপতরঙ্গ চোখের পাপড়ির উপর প্রতিফলিত হচ্ছে। মুগ্ধতা আমাকে ঝাপটে ধরলো!

ঠিক এই অবস্থায় যদি ওর একটা পোর্ট্রেট আঁকতে পারতাম। হাত-পা আনচান করছে। কী করব তাই ভাবছিলাম?

আশপাশে তাকিয়ে দেখতে পেলাম, দেওয়ালে ঝুলানো একটি ক্যালেণ্ডার, সেখানে তাজমহলের ছবি। ওটা নামিয়ে আনলাম। ছবির বিপরীত পৃষ্ঠা ধবধবে সাদা। ওটাকে কাজে লাগানো যেতে পারে। কিন্তু একটা কলম বা কাঠপেন্সিল পাবো কোথায়?

বাইরে বের হলাম। আমাকে দেখেই কড়িডোরের ওপাশ থেকে যুবকটি দৌড়ে এলো। এসেই বলল, ‘স্যার, আমি সত্যিই দুঃখিত.. আপনারা খুবই সচেতন..’
যুবককে থামিয়ে বললাম,‘দুঃখিত হবার কারণ নেই। আসলে এই মুহূর্তে আমার প্রয়োজন একটি ভালো..’

কথাটা না শুনেই যুবক বলল,‘আমি জানি স্যার আপনি কী চাচ্ছেন..’
যুবক পকেট থেকে একটি কনডম বের করে এগিয়ে দিলো।
আমি ওর দিকে তাকাতেই আবার বলল, ‘দেশি নয় বিদেশি, চমৎকার ফ্লেভার আছে। অরেঞ্জ ফ্লেভার..
‘আসলে ওটা আমার প্রয়োজন নেই।’
যুবকটা হেসে বলল, ‘সমস্যা নেই স্যার। কোনো কিছু ছাড়া তো আসল আরামটা বোঝা যায়, কিন্তু ব্যারামের ভয় তো, তাই মানুষ বাধ্য হয়ে লাগিয়ে নেয়। সিতারা মেম এটা কন্ডিশন..’
যুবককে থামানোর জন্য চড়া গলায় বললাম, ‘একটা বেকুব তুমি.. থামবে, আমি কী চাচ্ছি তা জানতে চেয়েছো?’
‘জ্বি স্যার বলুন। মদ বা অন্য কিছু লাগবে?’
‘না, এখন ড্রিংক করব না। তুমি আমাকে একটা কলম বা কাঠপেন্সিল জোগাড় করে দাও।’

যুবক যেন আকাশ থেকে মাটিতে পড়ল। তিনতলাতেও ওদের অফিসঘর আছে। হ্যাঁ, হাই কোয়ালিটির নিষিদ্ধপল্লীতে একাধিক অফিসঘরও থাকে। ওখানে খাতাজুড়ে লেখা থাকে রুম নম্বর ও যৌনকর্মীদের নাম। কটা রুম খালি আছে, আর কটা রুমে খদ্দের ঢুকেছে, কে কখন ফ্রি হবে, কোন গেস্টের সময় কয়টা পর্যন্ত এইসব। হিসেব নিকেশেরও ব্যাপার রয়েছে। আমি রুমে চলে এলাম। মণি টেবিলে মোমবাতি রেখে আগের মতো বসে আছে মেঝেতে। আমাকে দেখে ও চমকে উঠল, পিছিয়ে যেতে যেতে ওয়াশরুমের দরোজায় ঠেকল ওর পিঠ।
কিছুক্ষণ পর যুবকটি দরোজার কাছে এসে বলল, স্যার ভেতরে আসবো?
আমি এগিয়ে গেলাম। একটি কাঠপেন্সিল ও একটি টর্চ হাতে দিয়ে যুবক চলে গেল।

টর্চ জ্বেলে মণির দিকে তাকালাম। জ্বলন্ত কয়লার মতো লালচে ফর্সা দেখাচ্ছে ওকে। বললাম, মণি উঠে এসো। ভয়ার্ত হরিণীর মতো মেয়েটি এগিয়ে এলো। ঠোঁট জোড়া কাঁপছে, লেপ্টে দেওয়া লিপস্টিক অমসৃণ হয়ে আছে। এগোবার সময় নূপুরের শব্দ জেগে ওঠল। কাছে আসতেই ওকে সোজা করে দাঁড় করালাম। হলুদ শাড়ির আঁচলটা সামান্য সরিয়ে অনেকটা বামদিকে নামিয়ে দিলাম। ওর মাঝে কর্মজীবী নারীদের অবয়ব ফুটে উঠল। ব্লাউজে ঢাকা স্তনযুগল মোমের আলোয় বেদানার মতো ফেটে পড়তে চাইছে। আঁচলটা শরীরের পেছন দিকে টেনে তুলে দিলাম ডান কাঁধে। ওর বাম হাতের তালুতে বিশাল মোমটা বসিয়ে ডান হাতের বৃদ্ধা ও তর্জনীর মাঝখানে চেপে ধরতে বললাম। মন্ত্রমুগ্ধের মতো ও আমার কথা অনুসরণ করছে। ওকে দাঁড় করালাম দরোজার ঠিক পাশে। সে মাথাটা ঈষৎ নত হয়ে তাকিয়ে আছে নিচের দিকে। চোখের পাপড়ি আয়নার মতো ঝলমল করছে। টর্চের আলো অনেকটা আড়াল করে কেবল ক্যালেন্ডারের পাতার দিকে রেখে আমি মনোযোগ দিলাম আঁকার নেশায়। সে রাতে আর বিদ্যুৎ এলো না। ঘামে ভিজে জবজবে হয়ে উঠল জামা। তবুও থামতে পারিনি, মোহনীয় রূপের আবহকে দাগাদাগিতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা। ওর হাতের তালু আঁকতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম মোমের ঠিক নিচে একটা ধারালো ব্লেড! আলোয় ঝিলিক দিয়ে উঠছে খুনের সাধ নিয়ে।

যখন আজান হলো, তখন আমার আঁকা সম্পন্ন হলো। মণি আমার দিকে অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে। জানালার ওপাশে ফরসা আভা জেগে উঠছে। আঁকা শেষে বুঝতে পারলাম আমার শরীর জাপটে ধরে আছে ভ্যাপসা গরম! ভাবলাম, ওয়াশরুমে গিয়ে গোসলটা সেরে নেওয়া প্রয়োজন। ঝটপট শার্ট খুলে ফেললাম। মণিকে বললাম, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলে এখন মোমটা নিভিয়ে রেখে দাও। তুমি বরং বিছানায় এসে শুয়ে পড়ো।

মণি তৎক্ষণাৎ ছুটে এসে আমার পায়ে লুটিয়ে পড়ল। কেঁদে বলল, ‘ভাই দোহায় লাগে আমার সর্বনাশ করবেন না। প্লিজ, আমাকে বাঁচতে দিন। নয়তো আমি আমাকে শেষ করে দেবো।’ হাতের ব্লেডটা দেখিয়ে মণি কথাগুলো বলল।
‘শোনো, আমি তোমাকে কিচ্ছুটি করবো না। তোমার কোনো ভয় নেই।’
‘আমাকে জোর করে ওরা এখানে নিয়ে এসেছে। বিশ্বাস করুন, আমি নিজের ইচ্ছায় আসিনি।’
এসব শোনে আমি থমকে গেলাম। গোসল করার ভাবনা টুটে গেল।
‘তুমি এই নিষিদ্ধ জগতে কেন এলে? কীভাবে এলে?’
ইচ্ছার বিরুদ্ধে এসেছি। স্বামীকে বাঁচাতে এছাড়া আমার আর কোনো পথ খোলা নেই।
স্বামীকে বাঁচাতে কোনো নারী তার সতীত্ব বিলিয়ে দিতে পারে, এমন মহৎ ঘটনা আমার পূর্বে জানা ছিল না। কিন্তু কেন এমনটি হলো? জানতে ভারি ইচ্ছা করছে।

ওর হাতের ব্লেডটা সরিয়ে নিলাম। বললাম, ‘এখানে চুপচাপ বসো। আমি তোমার সব কথা শুনতে চাই।’
মেয়েটা আবারও আমার পা জড়িয়ে ধরল। কেঁদে আগেই দু’চোখ ফুলিয়েছে। মাথায় ভেতর যুবকের সেই, ‘কাঁচা মাল, মজা পাবেন’ শব্দগুলো ভেসে উঠলো। তার মানে, মণি আজকেই প্রথম এই ভয়াবহতার মুখোমুখি হয়েছে। আবারো বললাম, ‘ভয়ের কিছু নেই। আমি তোমার কথা শুনতে চাই।’ অভয় পেয়ে মণি বলতে শুরু করল। সে কথাগুলোই ঝটপট গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করলাম, কতটুকু পেরেছি জানি নে। প্রথমে মণি প্রেম করে ঘর পালিয়ে বিয়ে করার ঘটনাটা বলল, সে দীর্ঘ ঘটনা এ গল্পে লিখতে গেলে, গল্প উপন্যাসের রূপ নেবে, তাই প্রেম কাহিনি এড়িয়ে গেলাম। ঘর পালিয়ে দুটো বছর কেটে গেছে ওদের। মণির বাবা-মায়ের সাথে ওর যোগাযোগ নেই। স্বামীর ঘরে দুঃখ কষ্ট! অভাব অনটন। খেয়ে না খেয়ে করেছে দিনযাপন। মণি ও তার স্বামী জহির দু’জনই চাকুরি করত গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে। সামান্য আয় বাসা ভাড়াসহ নানা খরচেই ফুরিয়ে যেত। এর মধ্যে মণি একদিন কাজ শেষে ফেরার পথে দেখতে পায় জহির কোনো এক অচেনা মেয়ের সাথে কথা বলছে। বাসায় ফেরার পর জহির জানায়, মেয়েটির নাম চম্পা। সে অন্য একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। ওখানে বেতন ভালো। ওই ফ্যাক্টরির সুপারভাইজার চম্পার আত্মীয় তাই জহির চাচ্ছে কোনোভাবে যোগাযোগ করে কাজটা পাল্টে নিতে। মণি এই শুভসংবাদ শুনে খুশি হয়। কদিনের মধ্যে চম্পার আত্মীয়ের সহায়তায় জহির কাজটা পাল্টে নিতে সক্ষম হয়। বেতন ভালো হওয়াতে দিনগুলো বেশ আনন্দে কাটছিল। এভাবে চম্পার সাথে মণিরও ভালো পরিচিতি ও সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

একদিন রাতে মণি স্বামীর জন্য অপেক্ষা করে ঘুমিয়ে পড়ে। সে রাতে জহির ঘরে ফেরেনি। তার পরের দিনও জহিরের ঘরে ফেরার কোনো ইয়ত্তা নেই। একদিন দুদিন করে চারমাস কেটে যায়। মুঠোফোন বন্ধ। কোনোভাবে জহিরের কোনো খোঁজ মিলছে না। মণি বাসায় একা। তারপরও এদিক সেদিক স্বামীকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। চম্পাদের ঐ ফ্যাক্টরিতেও খবর নিতে গেল মণি, কিন্তু কেউ কোনো হদিস দিতে পারল না, চম্পার সাক্ষাতও পেল না। ম্যানেজার জানালো, চম্পা ছুটিতে আছে। চম্পার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কল দিলো, বন্ধ অপারেটর। দিশেহারা মণি কী করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। সে তার স্বামীকে প্রাণের চেয়েও অধিক ভালোবাসে। সে ভালোবাসার জন্য মণি জীবন বিসর্জন দিতেও প্রস্তুত। প্রথমদিকে গার্মেন্টসে ডিউটি শেষে স্বামীর খোঁজে বের হতো। নিরুপায় হয়ে চাকুরিটাও ছেড়ে দিলো। সামান্য জমানো টাকা ছিলো তা দিয়েই এদিক-ওদিক খোঁজ করা, থানা পুলিশ প্রভৃতিতে খরচ করে খালি হাতে ঘরেই পড়ে রইল। দুঃসহ দুর্দিনে চম্পার কথা আবারও মনে পড়ল। এবার চম্পার মোবাইলে কল ঢুকলো। জিজ্ঞেস করে জানতে পারল, সে গ্রামে আছে। তার মা খুব অসুস্থ। চম্পা শান্তনা দিয়ে বলল, শহরে ফিরে সে মণিকে যেভাবেই হোক সাহায্য করবে। এভাবেই একা অসহায় পথ হেঁটে চলছে মণি।

এক দুপুরে মণির বাসায় এসে হাজির হয় অচেনা এক মহিলা। মহিলা জানায়, মণির স্বামী অপহরণ চক্রের হাতে বন্দি। কোনো এক গোপন সূত্রের মাধ্যমে মহিলা সে তথ্য জানতে পেরেছে। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে দেড় লাখ টাকা দাবি করেছে। মহিলার দায়িত্ব ছিলো তথ্যটা পৌঁছে দেওয়া, তাই সে মণিকে বিষয়টা জানিয়ে দিলো। মণি প্রথমে কান্নাকাটি করে ভেঙে পড়ল। একসময় শান্ত হয়ে বলল, সে জহিরের সাথে দেখা করতে চায়। মহিলা জানালো, অপহরণ চক্রের মোবাইল নম্বর তিনি জোগাড় করে এনেছেন। সে নম্বরে কল দেওয়া হয়। ওপাশ থেকে তীব্র কর্কশ শব্দ ভেসে আসে। এক সময় শোনা যায় জহিরের কণ্ঠস্বর। জহির করুণ কণ্ঠে বলছে, ‘আল্লা আমারে বাঁচাও.., মণি আমারে বাঁচাও, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে, এত টাকা কই পাবো!’

ওপাশ থেকে অপহরণকারীদের মধ্যে কোনো একজন চিৎকার করে বলে, ‘তিনদিনের মধ্যে টাকা না দিতে পারলে লাশ পাবি নদীর পাড়ে।’

এসব শুনে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে মণি। আগন্তুক মহিলার সেবায় মণি জ্ঞান ফিরে পায়। মহিলাকে মণি মা বলে ডাকে। বলে, ‘আপনি আমাকে দেড় লাখ টাকা জোগাড় করার ব্যবস্থা করে দিন আমি সারাজীবন আপনার দাসি হয়ে থাকবো। মহিলাটি জানায়, একটা নিষিদ্ধ পথ তার কাছে খোলা আছে। আর সেটা হলো শরীরবৃত্তি। হ্যাঁ, সেই উপকারি অচেনা মহিলাটিই হলো নিষিদ্ধ পল্লীর পরিচালক সুরাইয়া সিতারা। মণি মেনে নিতে পারছিল না। তবুও শেষে তাকে মানতে হয়। এই কাজে রাজি হবার আগে মোবাইলে জহিরের সাথে কথা বলে পুরো বিষয়টা জানায়। জহির আশ্বাস ও বিশ্বাস ভরা কণ্ঠে বলে, আপাতত যেকোনো উপায়ে আমাকে বাঁচাও, তারপর তোমাকে ঠিক উদ্ধার করে ঘরে তুলব।’

স্বামীর কথায় মণি ত্যাগ স্বীকারে রাজি হয়! সুরাইয়া সিতারার কথা মতো থানায় যায় ও লিখিত সম্মতি প্রদান পত্রে স্বাক্ষর করে বাধ্য দাসির মতো। এসআই অবশ্য প্রশ্ন করেছিল, কেন সে এই অন্ধকারে পা বাড়াচ্ছে? সিতারার নির্দেশ মতো স্বীকারোক্তি দিতে হলো, পরিবারের আর্থিক অনটনই এর মূল কারণ।

দেড় লাখ টাকা গুনে সিতারা মণির হাতে তুলে দিলো। বলল, অপহরণকারীদের কেউ একজন এসে টাকাটা নিয়ে যাবে। আর ঠিক ঠিক ওদের একজন এসে টাকা নিয়ে গেল। আর ওপাশে টাকা প্রাপ্তির কথা বলার পর ফোনকলের মাধ্যমে জানায়, জহিরকেও মুক্তি দেওয়া হলো। কথাটা জহিরের কণ্ঠস্বর থেকেই এসেছে, এ ব্যাপারে মণি শতভাগ নিশ্চিত। তাই তো ওর স্বপ্ন সুদৃঢ়, জহির এসে ঠিক তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে। গত এক সপ্তাহ ধরে মণি অসুস্থ তাই সে কোনো খদ্দেরের হাতে পড়েনি। তারপর আজকে তার কক্ষে আমিই প্রথম আগন্তুক।

মণিকে বললাম, ‘আজকে আমি না হয়, তোমাকে স্পর্শ না করেই ছেড়ে দিলাম, ক্লান্তির এসবে আমার অনিচ্ছা। কিন্তু অন্য কারোর হাতে পড়লে তো তুমি রক্ষা পাবে না। কারণ পুরুষ মানুষ এখানে আসে টাকা ব্যয় করে শরীর কামড়াতে। তোমার স্বামী কবে আসবে, কখন আসবে তার তো কোনো নিশ্চয়তা দেখতে পাচ্ছিনে।’

মণি আবার আমার পা জড়িয়ে ধরলো। বলল, ‘ভাই, আমি রক্ষা পাইতে চাই, আমারে বাঁচান। আমারে সাহায্য করার মতো কেউ নাই। কারোর সাথে যে যোগাযোগ করবো সে উপায়টাও নাই, মোবাইলটা তো সিতারা মেডাম নিয়া গেল। কী করমু আমি..?’
‘সবই বুঝলাম, কিন্তু যার জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করলে, সে কখন আসবে?’
‘আসবে স্যার, আমাকে উদ্ধার করতে ঠিক আসবো উনি। আমার বিশ্বাস ভুল হইবো না। এহন এই বিপদ থেইক্যা শরীরটা বাঁচাইতে চাই..’
মণি নিরুপায় হয়ে কাঁদছে বর্ষার বৃষ্টির মতো। আরো বলছে, ‘এই শরীরটা আমার স্বামী ছাড়া কেউ ভোগ করে নাই, সে সুযোগও আমি কাউরে দিতে চাই না। এখান থেকে বের হবার একটা উপায় আমারে কইরা দেন ভাই।’

মণির আকুতি আমার চোখে জল নামিয়ে দিলো। বললাম, ‘আচ্ছা, তোমার স্বামীর কোনো মোবাইল নম্বর আছে তোমার কাছে।’
মণি মুখস্থ স্মৃতি থেকে একটা নম্বর বলল। আমি সে নম্বরে ডায়াল করলাম, ‘দু’বার চেষ্টা করার পর একটা মেয়ে কণ্ঠস্বর ভেসে এলো। ঘুম ভাঙা গলায় জিজ্ঞেস করলো, কে কাকে চাই?’
বললাম,‘জহির সাহেবকে দেয়া যাবে?’
‘না। সে এখনো ঘুমাচ্চে।’
‘আপনি কে হোন জহির সাহেবের?’
‘আমি তার স্ত্রী!’

ওপাশ থেকে লাইনটা কেটে দিলো। আবারো কল দিলাম। এবার একটা পুরুষ কণ্ঠ ভেসে এলো।
‘কে ভাই আপনি? এতো সকালে কল করে জ্বালাচ্ছেন?’
‘ভাই, প্রথমে যে কল ধরেছিল তিনি কে?’
‘তিনি আমার বিবাহিত স্ত্রী! আপনার আর কিছু জিজ্ঞাস করার আছে?’
আমি কোনো উত্তর করিনি। ওপাশ থেকে শোনা গেল, ‘যত্তসব ফাজলেমি।’

লাউডস্পীকারে ফোনকলের সবকিছুই শুনতে পেল মণি। সে নিশ্চুপ হিম হয়ে গেল। যেন পাথুরে মূর্তি!
কয়েকবার ডাকাডাকি করার পর, মণি সাড়া দিলো। ওর অস্পষ্ট কণ্ঠস্বর থেকে জানতে পারলাম, ঐ পুরুষ কণ্ঠটি তার স্বামী জহিরের। আর নারী কণ্ঠস্বরটি চম্পা নামের মেয়েটির। দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গেল ধোঁকাবাজির প্রেম খেলা।

সকাল ন’টায় রুম থেকে বেরুলাম। যুবক ছেলেটি আশপাশেই ছিলো, ওর দু’চোখ জুড়ে টিপস লাভের প্রত্যাশা। অথচ, সে জানে না, আমার পকেটে একটি টাকা পর্যন্ত নেই। আমি হাসি মুখে বললাম,‘আমার বন্ধুরা কেউ জেগেছে?’
যুবক জানালো, ‘না।’
ওর সাথে কথা বাড়িয়ে মণির তথ্য জানার চেষ্টা করলাম। সাথে এটাও আশ্বাস দিলাম, চলে যাবার মুহূর্তে তিনজনের টিপস একসাথে দেওয়া হবে। সে আনন্দিত হয়ে জানালো, মণিকে কব্জা করার পুরো ঘটনাটাই ওর স্বামী জহিরের সাজানো। পুরো টাকাই সে নিয়েছে। আর বুদ্ধিমতী সুরাইয়া সিতারা মণির কাঁচা শরীর থেকে সে টাকার কয়েকগুণ ঠিকই উসুল করে নিবে।

ফিরে আসার আগে মণিকে জানালাম, তার স্বামী জহিরের আসল চরিত্রের কথা। যদিও ও ফোনকল থেকেই সবকিছু বুঝেছিল। গতরাতে আঁকা পোর্ট্রেটটা মণিকে দিয়ে দিলাম। আর আশ্বাস দিয়ে বললাম, চিন্তা করো না, পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে ঠিক তোমাকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করবো।
ও নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। টুঁ শব্দটিও করলো না।

ওখান থেকে বেরিয়ে সাজ্জাদ ও কুনালকে মণির বিষয়টা বললাম। কুনাল প্রথমে বিরক্ত হয়ে বলল, এসব গল্প এখানকার সব মেয়েদের জীবনেই কম-বেশি আছে। আর সুরাইয়া সিতারার হাত অনেক মজবুত। এসবে জড়ালে সমস্যা হতে পারে, টার্গেটে পরিণত হতে হবে। সন্ত্রাস লেলিয়ে দিবে!’

সাজ্জাদ আমার কথা এড়িয়ে যেতে পারল না, ও জানে আমি কতটা একগুঁয়ে আর সংবেদনশীল! আমরা তিনজনই থানায় গেলাম। পুলিশ আমাদের সহায়তা করার আশ্বাস দিলো।

পরদিন সকালে পুলিশ নিয়ে সুরাইয়া সিতারার ঢেরায় হাজির হলাম। জানলাম, গতকাল দুপুরে মণি আত্মহত্যা করেছে। ঘরের ভেতর বিদ্যুতের তার কেটে নিজেকে জড়িয়ে জীবন বিসর্জন দিয়েছে। ফেরার সময় চোখ পড়ল ঝাড়ুদারের কাজের উপর, সে রাতের আঁকা পোর্ট্রেটটা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে ময়লার ঝুড়িতে। ছবির একপাশে মণি অন্যপাশে তাজমহল, ধূলিতে জর্জড়িত প্রেমের বিষাদ পৃষ্ঠা! বিশ্বাস ও আশ্বাসের করুণ পরিণতি!


 লেখকের অন্যান্য লেখা: 


সৌর শাইন। গল্পকার। জন্ম ১৯৯৫ সালের ২৫ জানুয়ারি, গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ায়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক। ছোটগল্প ও উপন্যাস লিখতে ও বয়ান-বুনন কৌশল নিয়ে খেলতে ভালোবাসেন। পাশাপাশি কবিতা ও শিশুসাহিত্যেও বিচরণ রয়েছে তার। প্রকাশিত কিশোর উপন্যাস: ‘শিপু যাবে মহাকাশে’ (২০১৭)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

  1. সৌর শাইন তার মেধার প্রতি সুবিচার করতে পেরেছেন। বাংলা সাহিত্যের ভূবনে তিন যে এক নতুন জগত সৃষ্টি করতে চলেছেন, তা আঁচ করা যায়। তাকে অভিনন্দন।

    উত্তরমুছুন

মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।