সূফীনামা এক
আনা হাজেরুন
আনা নাজেরুন
আনা গায়েবুন
আনা মুহিত্তুবিন কাফেরুন।
যা কিছু আছে তার অর্ধেক গোপন—
যা কিছু বর্তমান অর্থ তার খোলাসার মতন।
আ- বর্ণে আমি
ল- বর্ণে লয়
ল- বর্ণে ক্ষয়
আ- বর্ণে আমিই
হ- বর্ণে হই
আমি ক্ষয়ে ক্ষয়ে আমিই হই!
সূফীনামা দুই
কহে নিরঞ্জন,
প্রতিটি জীব আমার সমান
শুন্য হস্তে আমি শুন্যে বিরাজমান
যাহা কিছু করেছ জীবে দান
তাহাই মোর অর্জন...
সূফীনামা তিন
আমি এবং তিনি
একমুখের দু'টি চোখ
একটিতে এলে জল অন্যটি কাঁদে...
সূফীনামা চার
ভাবে উদয় নির্ভাবে অস্ত
যে চিনেছে সেই নিরস্ত...
মৃত্যু কার্নিভাল
এমন মৃতদিনে আগামীতে নয় নির্ভর,
কেমন সুন্দর!
মৃতকে অতীতের কবরে দেওয়া যাক!
তিনি, —জীবিত বর্তমান অভিনয়!
ভিতরে-ভিতরে ঈশ্বর দ্বিধান্তিত৷
সময়ের বালির উপর নখের ছাপ;
সম্ভবনার সিলিংয়ে বিধ্বস্ত জাহাজী!
রক্তাক্ত রূপ, রক্তমাখামেঘ!
আকাশ হারিয়ে গেল উড়ন্ত যাত্রী দেখে!
ধুলো থেকে তুষার, রেশম এবং দুধচাল হচ্ছে তৈয়ার...
অপেক্ষা
অপেক্ষা
অপেক্ষা
পুনরায় প্রেমের কবিতা
যে দ্যাখায় দূরত্ব বাড়ে
সে দ্যাখা না-ই বা হলো আর৷
বহুদিন গত হ'লে
আঁচলের গহীন থেকে
রঙিন মুখখানা তুলেই যদি বলো
এভাবে দ্যাখা না হ'লেই ভাল...
সে দ্যাখা না-ই বা হলো!
রেডিয়েশন
(ডাঃ মঞ্জুরুল ইসলাম ফুয়াদ; বন্ধু তোকে—)
যাই হোক, অবশেষে তোকে মনে পরেছে...
ফুয়াদ ক’দিন আগে বললো-
‘তোর ঘরে ঢুকলেই,
বিড়ির অসহ্য গন্ধ পেতাম৷’
সেই যে ভুলে যাওয়া, ক্ষয়েও যাওয়া...
মৃত্তিকার বসতি ক্ষয়ে গিয়েছিল
তুমুল হট্টগোলে।
বয়োবৃদ্ধ অচিন পাখিটা নুইয়ে গিয়েছে
বাজারি আচ্ছাদনে।
শহরে রেডিয়েশনের মাত্রা এপার-ওপার
শহুরে কবির কাপড়ের ব্যাগে
এখন রেডিয়েশন৷
তাই তোকে মনে পরছে!
জীবনবাস্তব! জীবনবায়না! যেহেতু বলতে পারিনি শোকার্ত সংখ্যাটি কত, সেহেতু শোক নয়...
চোখ প্রশমিত করার জন্য ঘুমের আগে ঘুম আসে,
আগের স্বপ্নগুলি চিন্তার গাউন এবং টুপির উপর রাখা,
কীভাবে যেন আমরা জেনে যাই সমস্ত গন্ধ এবং হৃদস্পন্দন
হঠাৎ করে বিষাক্ত বাষ্পের মত মস্তিষ্কের চেম্বারে ঢুকে
প্রার্থনায় মত্ত হয়ে ওঠে!
রহস্যভূমি অপরিচিত, বাতাশে ভর করে
তার দূরত্ব পাঠায়৷
ভূমি অপ্রত্যাশিত - অনুমান অনতিক্রম্য
যেখানে শীত পাচ্ছে অজ্ঞাত আকার৷
কীভাবে আত্মা যেন অন্য আত্মায়…
ভেতরের অনুভূতি যা না ঠকায় না মিথ্যা হয়,
কিন্তু স্ব স্ব প্রকাশ
জীবনের সমস্ত জীবন অকার্যকর বা বুদ্ধি সঙ্গে সম্পূর্ণ লেখা,
অক্ষরে অক্ষরে এবং পরিচিত!
সুতরাং,
আত্মা একা তার ভয়াবহ স্বপ্ন দেখায়৷
ক্লান্ত চোখে কান্নাকাটি করার জন্যই ঘুম আসছে
ঘুমানোর চোখ নিঃশেষ করার জন্য যখন ঘুম আসে,
শেষ প্রিয়ঘুম, যার নরম আলিঙ্গনে মালামাল,
এবং যাদের দুঃখের দুঃখ আমাদেরকে পুরস্কার প্রদান করে
আমাদের সব আবেগ শান্ত হয় চুম্বন নিয়ে
দীর্ঘ আত্মবিশ্বাসী উত্তর আমাদের আত্মা
আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পারে না এমন বিষাদে,
ক্লান্ত চোখে সীলমোহর দিয়ে তখন ঘুম আসে!
মাহফুজুর রহমান লিংকন। কবি ও প্রাবন্ধিক। জন্ম ১৭ মার্চ ১৯৮০ কুড়িগ্রাম জেলায়। প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ: ‘অমীমাংসিত ফুলের দেবতা’।
2 মন্তব্যসমূহ
আগে কখনও পড়া হয়নি কবি লিংকন এর কবিতা। আজ পড়লাম। অসাধারণ সব লেখা।
উত্তরমুছুনভালো লাগলো৷ শুভকামনা ভাই…
উত্তরমুছুনমন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।