TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

কবিতা সংখ্যা: প্রারম্ভিকা | নাদিয়া জান্নাতের কবিতা



বিরুলিয়া

গাঙের জলে থরথরিয়ে কাঁপতে থাকা হাঁস
সাঁতার ভুলে দাঁড়িয়ে আছো ছিন্ন দিনে একা
চুপসে আছো বলতে কথা মুখের পরে যার
করুণ চোখে মনস্তাপে তাকিয়ে থাকা আর

কোষার নায়ে বাদাম তুলে আসার কথা কার
ঘাসের ভেজা বুকের ভাঁজে দুখানি চোখ যার
সন্ধ্যে হলে মাচান তলে হেলাফেলায় আসা
প্রতিধ্বনি ভাসিয়ে জলে পাথর হলো ভাষা

তবে কি রোজ ধানের ক্ষেতে বাতাস ছুঁয়ে থাকো!
নাভীর তীরে বাজাও ভেঁপু আমের আঁটি গাঁথা?
অস্ত্রধারে রাখলে মাথা ওমন চোখে চোখ
কচুরিফুল তুলতে গিয়ে তুরাগ দেখা হোক।


কহরদরিয়া

খুব ভোরবেলা শরীরে শরীর রেখে
যে বুকে তোমার চিরগঙ্গা
যার সঙ্গে সূর্যাস্তের বিবিধ তুরাগ
কহরদরিয়া থেকে লুটে বলো, যাবে? 

সারি সারি মাংসের দোকান ফাঁকি দিয়ে
তাকে নিয়ে কোথায় পালাবে!

কারুকাজ করা ক্ষেতে ধ্রুপদী পিপাসা
এককালে জেগেছিল বলে
ঘুমন্ত স্ত্রী ফেলে, তুমি শ্বাস নিতে এলে 
হাসিখুশি তুরাগের জলে

বেসামাল ধানক্ষেতে একদিন ছিলো ছলচ্ছল ধ্বনি
একদিন দেখা গেল ভাসমান দুটো বুনো বাঘ।
প্রেমের চুল্লিতে এই ইহলোক স্যাঁতস্যাঁতে বলে
একদিন ভিজে যায় মিলনসাগর

নিয়তির শিরস্ত্রাণ তুমি,
কেন বিবসন হয়ে বাগিচা বানালে?


যোগাযোগ

পাতা ঝরার দিন দুপুরে পায়ের নিচে 
কেমন থাকে পীরিত ঘাস!
ফাঁকা মাঠের নাড়ার ফাঁকে যেমন থাকে 
আধমরা ও দূর্বাঘাস, তেমন আছি।
ক্লান্ত শকুন মাংস খেলে যেমন থাকে
যেমন করে বটের নিচে বাজায় বাঁশি 
কুসুমশ্যাম, তেমন লাগে একলা ঘরে

ধানের জমি দু'ভাগ হলে, চাষার বুকে 
ভাসতে থাকে বিরান নদী।
বিলুপ্ত ও কান্নাগুলো উজান থেকে 
ভাটির দিকে যখন যায়, মরণ লাগে।
গেন্দাফুলে দুলতে থাকে শান্ত বাড়ি।
পরস্পরে কেমন সাঁকো হচ্ছি পার
বলতে পারো?

দুয়ার ভাঙা একটা বাড়ি থাকতো যদি
ঘরের ধারে জন্ম নিতো লকলকানো পালং শাক
পাকা ধানের নরম ঘ্রাণে উঠতো কেঁপে আদিম বাস।
চাষাবাদের হিমবাহতে হতাম যেন কানু সিধুর 
জমজ ছায়া।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ