![]() |
প্রচ্ছদ: নাজমুল হোসাইন |
প্রাপ্তিস্থান
আমার বাবা ছিল পরিচিত জেনারেলদের একজন। তিনি বলতেন, যাপন মানেই পরিচয় মানুষত্বের। দাদা ছিল একজন ক্ষ্যাপা। তিনি জানতেন— মানুষ হল সিস্টেমে চোদে যাওয়া প্রাণী। তার বাবা ছিলেন ইংরেজ দালাল। তারো বাবা একটা মিৎ...
এরম সভ্যতার চিড়িয়াখানার গ্রিল ধরে দাঁড়ানো মুহাম্মদ-ও একজন। এভাবে যীশু- মুসা- সক্রেটিস-ও...
জানামতে, মানবজাতির পিতা অ্যাডাম একটা পরিচিত ছিটমহল
আদি সত্য এই যে, বৃক্ষদের পরিচিত কোনো পিতা নাই
পাখিদের নির্দিষ্ট কোনো শৌচাগার নাই— নাই কোনো পরিচিত সভ্যতা
তবুও ক্যানো পানি- ব্যাকটেরিয়া- এ্যামিবা- বিগবেঙ তত্ত্বে আমরা ইমান এনেছি?
কেউ কি বলেছিল এইসব রুপালী চাঁদে'র থালায় চক্রে পড়া বিচ্ছু'র ন্যায় ঘুরতে?
ক্যানো সন্দেহ জেনে তবু সব স্বীকারপত্রে আঙুলের সই দিলাম, হে মহাপিতা নেচার?
আজ্ঞাবাহী
প্রতিটি সকালবেলা—
অবনত দেহে দাঁড়াবে— মুখোমুখি সূর্যের—
শয়তান ডানা মেলে আড়াল করবে তেজোময়ী আলো
জন্মদাতা পিতার চে’ শয়তান কিছুকিছু মন্দের ভালো
বাদুড়ের ডানামেলার ঢঙে—
ছড়িয়ে দিবে উত্তপ্ত পশমের কালো তাঁবু,
মেলে দিবে দুহাত, ডানে-বামে
আবহমান দাস, তবু মুক্তির মত—
প্রতিটি সকালবেলা, তুমি সূর্যের মুখোমুখি
শ্বাসযতি দিবে—
য্যানো তুমি আজ্ঞাবাহী মিকাঈল
ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিতেছ, মানুষের ইতিহাসের প্রথম সকালবেলা
হ্রদ
উৎকৃষ্ট হ্রদের কথা মনে পড়ে
আহরিত যত মুক্তা-প্রবাল সুপেয় পানি
পর্বতচূড়া হতে দাঁড়িয়ে মনে হত—
শীতঘুম শেষে সূর্যঋষি জাগে স্নানে
জলে পাথর ছুড়ে মূলত দেখতাম—
হ্রদের পানিতে অবয়ব ঢেউ
আমাদের লুপ্তপ্রায় গান
ছিল হেঁয়ালির ঘোরে ফেরা চোখ
উড়ে যেতো ঝাঁকবদ্ধ পতঙগ ও শিস্
—"ওঁ-তৎ-সৎ"
বলে, প্রাচীন পুরুষ হ্রদে যজ্ঞ দিচ্ছে
আর মুঠি-মুঠি ছুঁড়ছে অহম-দানা
খসে পড়া ক্লান্তির এইসব অবিশ্রান্ত পর্বত
মনে আসে কোনো প্রাক্তন শরীর
বহুবিদ ধারাপাত খুলে ফেলে একপাশে
অনাবিল চিত্তে নেমে পড়ি হ্রদে
আর ভেবে বসি—
‘হ্রদ হল হৃদয়ের আদিপিতা’
মুছে ফেলে—
সমস্ত বেদনা আর উপচানো মুখের বাক্য, ক্লেদ
আহা হ্রদ— মাতৃযোনি— পবিত্র উজ্জল বীর্য
আজ জনতার ভিড়ে উঠে আসে,
একেকটা আহামা ঢেউ— আহা হ্রদ
নিহিলিস্ট
জঙগল থেকে পালিয়ে এসেছি বাঘের ভয়ে
মানুষের প্রান্তরে
আমি এক ভীত হরিণ
এসে দেখি মানুষ
তাদের অন্তরকে বানিয়েছে উঁচু-উঁচু স্তম্ভে
গুনে-গুনে সংখ্যা জমায় তারা
মূলত সিস্টেমে মারছে একে অন্যকে
ভেবে দেখি শেষমেশ
জানোয়ার মাত্রই পালিয়ে বেড়ানো কেবল নিজের কাছ থেকে একাএকা
অবকাশ, ঝিমিয়ে আসে দিকে দিকে—
অবশ হয়ে এলে— সন্ধ্যার মত, বেদনায় এলিয়ে দিও ক্লান্ত বিনোদন তোমার
আরো কিছু পথ পুষে দেহে— বিশাল মহিষের দৌড়ের উপর বজায় রাখা শিঙে
এখানে ফৌজি নাচের আসর হলে— পুরাতন সন্তানেরা উলঙগ চলে এসে পড়ে
ঝাঁক বেঁধে এখনও আসছে তারা, শত বছরের তোমার দিকে— ঘাড়ত্যাড়া
অথচ তাদের মত আরো অনেকেই এসেছিল বহুআগে— যূথচারী ভেঙে ভেঙে
মাছির মত উড়ে এসে কেবল ছাই হয়ে ঝাপিয়ে পড়েছে শেষে, আগুনের দিকে
জোহান কুতুবী। কবি। ৮ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৫ সালে জন্ম। থাকেন চট্টগ্রাম। একাডেমিক স্টাডি অপছন্দ করেন।
1 মন্তব্যসমূহ
ভালো লাগল
উত্তরমুছুনমন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।