TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

ফরিদ ছিফাতুল্লাহর কবিতা

প্রচ্ছদ: নাজমুল হোসাইন   

হারপিক 

মস্তিষ্কগুলি কেমন যেন ঠিকঠাক 
উৎপাদনে নাই। নিউরন প্রবাহ বাঁধা পাচ্ছে।
প্রসবিত হচ্ছে বিকল তনু। 

মগজের জরায়ুতে ক্লিনিং অভিযান
প্রয়োজন হলে হারপিক পাউডার চাই। 

হার পিক>তার ছবি
[ কোন জীবিত কিম্বা মৃত ব্যক্তির সাথে মিল পাওয়া গেলে তা নিতান্তই কাকতালীয় ] 

যেখানে আছে জলীয় কলীয় ক্ষার
হাইড্রোক্লোরিক এ্যাসিড। 
কমোডের অসুখ করেছে তনয়ার।  

মাথাতেও দরকার স্যানিটাইজেশান।  
ঠেকাতে হবে সংক্রমণ। 
হাঁটু থেকে মস্তকে 
করতে হবে পুনঃস্থাপন
                                   মস তিশ কোঃ


ঝি

কর্তা দর্শক ভানে আনমনা । 
সভ্যতার চাদর ঢাকা বিস্রস্ত চিন্তা সংশয়গ্রস্ত মন।
ন্যায়বোধ মদনের ক্রোধ বা প্রতিশোধ    
                                                 নিমেষে একাকার। 

উৎক্ষিপ্ত  যৌবনা মলিন দেহখানি দেখামাত্র 
গৃহকর্তার শরীর ও মস্তিষ্কের ভেতর ছোট ছোট ঢেউ। 

চারতলার ওপর যে ফ্ল্যাট তার টাইলসের যে ফ্লোর~
বিবর্তনের আগে সেটি ছিলো গাঁয়ের মাটিলগ্ন মেঝে। 
কিন্তু দুটি জায়গাই একই বিড়ম্বিত ভর্তৃদারিকার 
ঢলো ঢলো আর জ্বলো জ্বলো যৌবনের ক্যানভাস।

ধোপিনীর ভূমিকায় যখন তারে দেখা যায় 
সে এক দেদার রমণের ঝোড়ো খেলোয়াড়। 
কঞ্চুলি ফুঁড়ে বের হতে চায় বিল্বস্তন।

কত শত আহা উহু জন্মায় 
কর্তার সভ্যতার চাদর ঢাকা মনে।

এসব রমণীয় চিন্তাপ্রসূত অভিলাষের নাম 
কোন কোন ক্ষেত্রে প্রেম। 
শৃঙ্খলিত মনে জাগে বিশ্রম্ভালাপ। কখনো ঘোর অজাচার।
তবু অভিলাষ জাগে। 


পবিত্র গণিকাসভা

গণিকালয়গুলোতে প্রার্থনা সভা হবে। 
অর্চনা সেখানেই। 
দেহ পবিত্র করার আয়োজন সেখানে।
সেখানে মৃত মানুষ জীবিত হয়ে ওঠে।

গার্হস্থ্য আবর্জনা রিসাইকল করে 
বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় গণিকালয়ের কারখানায়।

পাপ মুচে তৈরি হয় ব্রহ্ম পূণ্য। 

ভাস্কর  চিরভাস্বতীরা গণিকাশ্রমে
গড়ে তুলেছে স্বর্গের রেপ্লিকা। 

ধ্যানে অনুধ্যানে জ্বলজ্বল করে উঠুক
গোলকের ভেতরখানি। আতরদানি 
সুগন্ধ ছড়াক অর্চনা সভায় ব্রোথেলে ব্রোথেলে।


নেক্রোফিলিয়া 

শাড়ির আঁচল খসে গেলে 
          দেহদড়ি থেকে
পুরো শাড়িটাই  ভূতলে গোল বৃত্ত। 
তারপর ঊর্ধ্ব শরীরে ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা ~
ব্লাউজের ভেতর বিল্বস্তন

গোঙায় কে ললিত প্রেক্ষণা আননে? 
কোত্থেকে আসে ফিসফিস বিশ্রম্ভালাপ? 

শীতল পেশল শবে বাঁশি বাজে।
না আমি নেক্রোফিলিয়ায় আক্রান্ত নই। 
নিষ্কাম দেহে কামের জোয়ার আনি
তারপর মিলিত হই। 

নেক্রোফিলিয়াক। 
আমার চেয়েও উৎকৃষ্ট প্রেম তার। 
জীবে দয়া করে সেইজন সেবিছে মানুষ। 


লিঙ্গনিরপেক্ষতা 

আসো যোনি আদান প্রদান করি।
বিনিময় করি পীবরস্তন।
দেহের কাঠিন্য, দীঘল চুল, স্ফীত নিতম্ব।

যা কিছু উৎসারিত করে লিঙ্গভেদ
সমানভাবে  বণ্টন করে দিই দুপক্ষে।

আসো আদান প্রদান করি পরিচ্ছদ
                  শার্ট-প্যান্ট
বেশভূষা চুলের কাঁটা পাঞ্জাবি ও দোপাট্টা। 

যা কিছু গোপন করে যোনিভেদি জীবন
ভাগ করে নিই উভয়ে।
                                   অথবা
পুড়ে ফেলি সকল যোনি নির্দেশক।



ফরিদ ছিফাতুল্লাহ। জন্ম ২১ মে ১৯৭৬, রংপুর জেলায়। জাতীয় বিমানসংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিপণন ও বিক্রয় বিভাগে কর্মরত। পড়াশুনা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্নতত্ব বিষয়ে এক বছর লেখাপড়া। প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ: ‘রোদ বুনি ছায়াপথে’ (২০১৮), ‘বিষাদের সঞ্চয়ী হিসাব’ (২০১৯, পরিবার প্রকাশনী)। বেশকিছু মননশীল প্রবন্ধ ও বই-আলোচনা ছাপা হয়েছে মুদ্রিত ও আন্তর্জালিক সাময়িক পত্রে। বেশকিছু স্মারকগ্রন্থও সম্পাদনা করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ