TopTime

আজ বঙ্গাব্দ

সিপাহী রেজার কবিতা

প্রচ্ছদ: নাজমুল হোসাইন

কীর্তন

গ্যালাক্সি থেকে বেরিয়ে,
দুলে দুলে মৌজের রাত;   ফুল অব সেলিব্রেশন!

পকেটে  মশাই আইডি কার্ড    মেয়াদ শেষ! বাসি পচা নোট...
  মোড়ে পুলিশ   ভুল পড়ে ইংলিশ।

টাকা চায়, দেখি দূরে আন্ধার    টিপটিপ সিগন্যাল জ্বলে!
মাঝে খুব নিরিবিলি    ভূতে আবার ডরাই কম
ক্ষুরে আবার বিশ্বাস রাখি!

পাশাপাশি কেউ এলে সাহস বাড়ে আকাশে ফালি ফালি মেঘ।
কেন জানি মনে হয়
বাসগুলা কাঁদে    রিকশারা নাকি চিপায় দাঁড়ায়া
পেচ্ছাব সারে;
    ভদ্রের কুলাঙ্গার
মহামতি সরকার   বেগুনের চাষ রাতারাতি বাড়ে!
চিকাদের
রাত
ফুটপাথ    নিরিবিলি ঘুমায় বান্দির ছেলে।

ভুল করে গিলে ফেলে
ভদকার পেগ    অনর্থক চাঁদ উঠে পলাশীর মোড়ে!
হুঁক্কাহুয়া শেয়ালের ডাক
বস্তুত কিছু ভিলেনি হাসি     লেনদেন কিছু অর্থ কামাই
নায়িকা ভিজে যায় এফডিসির ঘরে।
       পিরিতি পিরিতি
এক ধইঞ্চার জ্বালা    ব্লাউজের ভেতরে মাল, সেফটিতে রাখা
হুক খুলে
গলি মুখে
       গাঞ্জা বিলায়    এলাকায় এক মাদারতেরেছা!
       নিকোটিন
                  ফুসফুস
                           লিভারের
ব্যমো     মহিষে মহিষে রাত কতটুকু হলো?

   তুরুপে তুরুপ
রেখে ঢেকে খায় মন্ত্রী, রিপোর্টে জোকার,
নদী খায় চর,
গুজবে গুজব ইন্ডিয়ার ভাতার!
মনের মধ্যে রাত
         বহুজাতীয় সাপ
কর্পোরেট, কর্পোরেট! সাহিত্য নাকি
শিল্প শিল্প খেলা, মগজের সেলেবাস;
নাহ আপনি বড্ড  কনশাস!
ইউ নো, আই মিন ‘হোয়াই সো সিরিয়াস!’

যে যার দেয়ালের দিকে, অপেক্ষারত ধাক্কার দিকে!

মহানগরের ভেতর গুটিকয়েক লোক শুধু পারে সে গাড়িগুলো চালাতে। তাদেরকে বেরিয়ে আসতে দেখে, দূরের আরও কিছু লোক প্রস্তুতি এঁটে ফ্যেলে। সেসব লোক কিংবা চালক, অযথা ঢুকে পরার মত-টার্মিনালমুখী চলতি বাসে উঠে বসে পড়ে ড্রাইভিং সিটে। কিংবা রাত হয়ে গেলে টার্মিনালে ফেলে রাখা বাসের ইঞ্জিন স্টার্ট দিতে দেখা যায় এদের। এরকম যারা দেখছে, সেসব প্রত্যক্ষদর্শীর সংখ্যা উপরের প্রস্তুতি আঁটা লোকগুলোর সঙ্গে ধীরে ধীরে যুক্ত হতে থাকে। বহুদিক থেকে বহু বহু গাড়ি এ্যাম্বুলেন্সের মত অস্থির। অস্থিরতা নিয়ে তুলে নিতে থাকে একে একে সবকটাকে। কাউকে তুলে নেয় ব্রীজের উপর থেকে, কাউকে ছাদ থেকে, সিলিঙ ফ্যানের নিচ থেকে, রাস্তার ধার থেকে, নদীর পাড় থেকে, রেল লাইনের স্লিপার থেকেও তুলে নেয়া হয় কাউকে-না-কাউকে। আরও যারা ঘরের মধ্যে ভীতু-ইঁদুরের মত। তারাও গতি বুঝে, রীতি বুঝে, ছুটে এসে উঠে পড়ে বাসে। বাস চলছে। কেউ কাউকে না দেখে, না বুঝে, নানা ভাবনা পুষে, চলছে তো চলছে... এভাবে বাস ভর্তি শরীর নিয়ে, চিন্তার গতি নিয়ে, এগিয়ে যেতে থাকে যার যার কঠিন দেয়ালের দিকে, অপেক্ষারত ধাক্কার দিকে। প্রচণ্ড সে ধাক্কা! তার পরেও যারা বেঁচে গেলো তাদের নড়বড়ে দেয়ালের আঘাতে। তাদেরকেই হয়তো পুনর্বার-মহানগরের ভেতর গুটিকয়েক সেই লোক ভেবে, চালক ভেবে, উঠে পড়তে হয় গন্তব্যের দিকে, নিজস্ব কিছু দেয়ালের দিকে...

রাষ্ট্র

কাটা মাছ পড়ে রইছে আলাম।
ছাই সুদ্ধ লাল ভেজা রঙ খয়েরি প্রায়

মাছের মত আমরাও কেউ কেউ
পড়ে আছি কিনা গিন্নির সামনে
তা একবার-
কর্তাকে জিজ্ঞেস করা দরকার!


স্পাক্র্!

একটা অসহ্য দিন,
আরও আছে চ্যাটের বালের অস্থিরতা! কোথাও কিচ্ছু নেই!
যারা আসে, বুঝায় নানাবিধ ধুনফুন-তাদের স্রেফে ভরে দিতে ইচ্ছে করে

একদম চুপ! রাস্তায় প্রচণ্ড জ্যাম, বাইরে বৃষ্টি।
ভিতরে দগদগে ঘা। পাঁচিলে গজায় সম্ভাবনার নতুন নতুন বাল!
অথচ গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে ঠিক আগের জায়গায়।

এতদিনের দেখা ভরপুর যৌবনের শহর
হঠাৎই যদি বলে বসে-
আজ দিতে পারবো না, চলছে মাসিকের দ্বিতীয় দিন।
যদি ঢেকে দেয় জরায়ু, গুঁজে রাখে ন্যাপকিন।
তবে পরিনত এই টাটানো অসুখ, মৌলিক সুখ কীসে মিটাই?

মাথার মধ্যে সাউয়ার সেই উরকি-ধুরকি পেইন...
ইশ একটুর জন্য, স্রেফে একটুর জন্য ছুটে গেল লাস্ট ট্রেন!

কোন এক শালা হয়তো বলেছিল বাঁচো-নয়ত মরো!
উফফ কী অসহ্য! কী নির্মম!
বুকের মধ্যে শুধু ঘাই মেরে যায়। চুতিয়ার মত হাঁসি হেসেই যায়
বলেই যায়-আজই বুঝি মরে যাওয়ার দিন, হেরে যাওয়ার দিন!


****

মনে করেন আপনার জামা উধাও হয়ে গেলো ওপেন মার্কেটে, তারপর প্যান্ট, তারপর আপনে দৌড় দিতে যায়া দেখলেন দৌড় না দিলেও হয়, কেউ দেখতেছে না, সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত, একটা পাগল তারও জামা নাই সেও আপনার মত দৌড় দিতে গিয়া আপনাকে দেখে থামল। ব্যাপারটা আয়নার মত হইলো কিনা সেটা আবিষ্কার করতে গিয়া দেখা গেল, হ, আয়নাই, অন্যরাও ঠিক একই ভাবে ব্যস্ত। নিজের মত আরেকজনকে প্রতিবিম্ব ভেবে অগ্রাহ্য করে, কেউ দেখছে না ভেবে ব্যস্ত।


জমানো ক্ষুধা

জানলা খুলে দেই
ঢুকে পড়ে সকাল

আলো
পেয়ে
ইঁদুরের মতো কিছু ক্ষুধা
আচমকা! দৌড়ে পালায়
নাভির অন্ধকারে...

খোলা মুখের কুয়ায়
হাত রাখা ইশারায়
বললাম ‘আপনি ঘুমান’
আবার দেখা হবে সকালে।



সিপাহী রেজা। জন্ম ঢাকায় ১৯৮৭ সালের পহেলা জানুয়ারি। নিজের সার্টিফিকেটের সঙ্গে নিজের কোনো মিল নাই। রাখি নাই। না জামায় না কাপড়ে। এরজন্য একটা চোরের একটা পুলিশ কেন্দ্রিক চক্কর। ইউনিফর্ম চেঞ্জ হয়ে যাওয়ার চক্কর। চক্করে চক্করে ঢাকা পড়তে থাকা শরীরে এখন পর্যন্ত একটাই কবিতার বই নাম ‘সিরাপ’।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ