মায়ের কথা মনে করে মসজিদে যাই। তেলাওয়াত শুনি, মা বলে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করিস। মসজিদের দেওয়ালে ঘড়ির ডিজিট লাল। এককোণ কাঁপে। আনত চোখে লুকোচুরি। বাক্যটা বলে, "দুনিয়াবি আলোচনা হারাম!" মা আড়ালে যায়, খোদা আসে। খোদার পায়ে সেজদা দেই— পা শক্ত, ফ্লোরের মতো। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে মা বলে, "চুল এতো বড় রাখিস কেন!" তাকবীর হলো "আল্লাহ আকবর" তাকাইয়া দেখি আল্লা নাই। মাও নাই। খুঁজলাম...পেলাম না। হাঁসফাঁস লাগলো— অহ! বড় বাঁচা বেঁচে গেছি। তুমি ম্যাসেঞ্জার চেক করো নাই। আরে, চিত্র সাথে নিয়েতো নামাজ হয় না! আমার মনে এতো চিত্র কেন? আমার মনে তুমি কেন জীবন্ত ছবি? সেজদায় গেলাম–উষ্ণ! একি, কোল বিছিয়ে রেখেছো কখন!
অকাল উদ্দেশ্য
বিধেয়র আলোচনা তেলর এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ইন্ডেক্স
রোমান্টিক জানালা মহড়ায় ভেঙে যাওয়া চুরচুর কাঁচ।
কী আশ্চর্য!
আপনি মানতেই রাজি নন
আগুনকে শ্মশানে
পোড়ালেও তাপ ও রঙের
আস্ফালন অভিন্ন—
পৃথিবীর কোনো রাতে সিক্রেট কনভারসেশনবক্স
গর্ভবতী হলে তার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাক মেঠো ইঁদুর
—যার মুখে ফসলের গান।
উদ্ভট
অর্থহীন
একঘেয়ে
কিম্ভুতকিমাকার যোগে
যে রোস্টে স্পুন চালিয়ে যাচ্ছেন
দয়া করে চেখে দেখবেন
কোথাও রস আছে কিনা!
কি ভাবছেন? ঠোঁট কাঁপছে?
ভাইব্রেইশন অফ করুন প্লিজ।
ওয়ান, টু, থ্রি....... থামলেন কেন!
জানালার কাচে কোনো রক্ত নেই
কিছু বাড়তি চর্বির রক্তিম আল্পনা।
আমদের উচিত আজ পিয়ানো
থেকে উঠে কিছুটা পান করা
যদিও স্বস্তি ও রঙে অনাগ্রহ
তবুও মৃত্যু কিছুটা চিল করুক।
ইঁদুর অপারেটর
পৃথিবীর রাস্তায় কিছু ডুমুর ফেলা হলো
লাল-সাদা-কালো রঙের বিবিধ ডুমুর
কয়েকজন ভাড়াটে শেয়াল ডুমুর ফাটিয়ে শোনালেন সম্মোহন।
ফাটা ডুমুরের পেট থেকে বের হয় অসংখ্য ইঁদুর শাবক
ডাইনোসরের দাঁত নিয়ে তারা বললো হে শেয়াল আপনি
মহান। দিগ্বিদিক ছড়িয়ে গেল ডুমুর ফাটা ইঁদুর বাচ্চারা।
ইঁদুর হাতি হয়, ইঁদুর ঘোড়া হয়, ইঁদুর বাদুড় হয়
ইঁদুর আকাশ খায়, ইঁদুর সাগর খায়, ইঁদুর পাহাড় খায়
ইঁদুর বাদুড় খায়, ইঁদুর ইঁদুর খায়, ইঁদুর রক্ত খায়.....
নিশ্চয়!
আপনার হাসি গোপন থেকে যাবে মহামান্য ইঁদুর অপারেটর!
ডাইনুষ থেকে একুশ
সেদিন রবিবার হতে পারে
হতে পারে মঙ্গলবার বিকেলের শেষ
অথবা তের কোটি বছর পূর্বের পুরোনো সন্ধ্যা
দেখবো একজন মদের গ্লাস হেঁটে যাবে ঠোঁট নিয়ে
অজন্তায় দেখেছিলাম যারে বুদ্ধের সাথে পানশালায়।
বাতাসেরা গল্প করবে পান-বিড়ি খাবে কাশি দেবে ধীরে
কয়েকজন মৃদু আলো আস্তে আস্তে কাছে এসে বলবে
অন্ধকারের রাজ্যে তোমায় স্বাগতম হে, মানব শয়তান।
কয়েকজন আট পায়ের নাচুনে ব্যান্ডের তালে তালে
প্রার্থনা করবে— ব্লাউজ খুলে দাও ভারী বুকের যুবতী রাত।
ডাইনুষ যুগের গন্ধ এলোমেলো রাত্রির ভাঁজ ভাঁজ রোমকূপে
মহামান্য শয়তান অতিথি— হিত করো কম্পাস সমুদ্র গভীরে।
বার্বিকিউ আর মদের ঘ্রাণে ছুটে আসবে আমাদের প্রপিতামহ
গোরপোড়া বসন্তের তিরন্দাজ দিনেরা কোরাস গায় নেপথ্যে।
ভাল্লুক মিররে প্রতিভাস ঈশ্বরহীন পলিতে রক্তজবা ফসিল
মহান শয়তানের পায়ে সেজদারত মরালের ছেঁড়া পালকেরা।
জিপারে আটকা নম্র খরগোশ বিপাক নিয়ে দেখতে থাকবো
দেখতে থাকবো উঁচু উঁচু শুয়োরের দাঁত— মানুষের চোয়ালে।
তির ফিরে আসো
প্রত্যাশার পুত্ররা ঘুমিয়ে যাও...
এই শহরে কোনো সরাইখানা নাই
তৃণভূমির জননীরা ডুবে গেছে সাগরের নীচে
সাগর মিশে গেছে আকাশের উপরে ছয় মহিষ জলে।
আমি এই সাগরের ঢেউ আর তৃণের অবাধ্য সন্তান
ভারী বাতাসে যতটা মিশে যাই, উচ্ছ্বাসিত ততোধিক।
আমি বুঝে গেছি একটা কিছু কখনোই অন্য কিছু নয়
তুমি আমি নও, আমাকেও পাবে না তোমার ভেতর।
প্রেম শুধু জলের বরফ ইব্রাহিমকে পোড়ানো আগুন
তোমাকে যেতে দেই, তোমাকে যেতে দেই এই ভেবে
লাল সূর্যাস্ত বুকে মাথা রেখে ঘুমোতে পারে গাছেরা।
এই ভেবে ছেড়ে দেই তির— পুনরায় ফিরে এসো তূণে
ক্ষরণের যন্ত্রণা নিয়ে ক্রুশবিদ্ধ করে রাখো আমায়।
পাঠশালা
মুগ্ধ পাঠ ওষ্ঠমঙ্গল। বললেন কালসাপ! তাপের শহরে
লেবুও শরবত। মন তার জিপসি নারী খোসামোদ করে
শিঙে লাগায়, বানায় পাঁচ-দশটাকার নাতজামাই!
ফ্যালে বুকের কাপড় আনে জাদুচুম্বক লাগায় রঙ
ছোপা ঘোর! তার মন জেব্রাক্রসিং- আসো আর যাও
আসো আর যাও সুড়ঙ্গদ্বার অবারিত হা হা হা....
বাটারফ্লাইয়ের সামনে সামান্য বায়ে শহুরে ডাস্টবিন! জিপসির পদ্মনাভি কালোপেট! আর কত ভেতরে যাবি
বাপ এখানে থির হয়ে দাঁড়া। আহ! আর কী আছে উন্মুক্ত করো হে পাঠাগার, এখনো পড়ে আছে বহু পাঠ-
ভাজক নিতম্ব গুণফল স্তন! আসো আসো পৃথিবীর
গতিরা স্থির হয়ে পাঠশালায় ঢুকি।
একজন সিসিফাস
সমস্ত আমি ঝুঁকে গেলে কোন এক শরীরে
গ্রহণ লাগে সূর্যগ্রামে, ভেঙে যায় স্রোতের
সীমা, চূর্ণবিচূর্ণ স্রোত কুড়াতে কুড়াতে সমুদ্রে
ডুবলে। পার হয় আগ্নেয়গিরি বাতাসে হেঁটে।
সিসিফাসীয় আশীর্বাদে মন মেরামতে সন্ধ্যা হয়
রাতে ভেঙে দেই, টুকরোটুকরো আকাশ তারা!
হাজার বছরের শরৎরাত, অব্যয়ী অপ্রেম
কুসুম খোলস দ্বন্দ্ব, কোন এক হেমন্তে ভেঙে যাবে জানি।
ক্লান্তি নেই নবগঠিত পূর্ণবুকে তাকিয়ে থাকাত মত
ক্লান্তি নেই। দ্বৈত প্রার্থনা শেষে ফ্রয়েডকে খুঁজি....
মিথ্যাবাদী! কোথাও কিছু সুপ্ত নেই, উন্মোচিত সব!
বিস্ফোরিত সমাপ্তিহীন আশীর্বাদ খোলসে কুসুম
নদী নদী জল-স্রোত অথবা ত্রুটিপূর্ণ ইঞ্জিনের কর্কশ চিৎকার!
বরফ জল; ছায়া মানুষ
অপরাহ্ণের আলো হলুদ হয়ে এলে
মনে পড়বে না কোন বিগত ক্যানভাস
মনে পড়বে না কোন মধুমতী কিশোরির কথা
যার বুকের অধিকারী ছিলাম ছয়-সাত বর্ষাকাল।
যার আকাশ আকাশ প্রজাপতি কোমর কোমর ঢেউ
পকেটে রেখে, বোতামে গেঁথে বেমালুম ভুলে গেছি তাকে।
আজ উপগত বর্ষায়—
আসন্ন নদীজল বরফ
অবদমনে ফেটে পড়া আনারের মতো
চৌচির আমাকে ঘিরে মাছি উৎসব।
পূর্বভাগ আকাশের অধিকারী হয়ে—
একটা ছায়া হাঁটে পায়ে পায়ে গায়ের সাথে
মনের খায়েশে! প্রশমিত হয় না বাড়ন্ত তাপ,
বকেরা উড়ে চলে শাঁ শাঁ পাখনায় কাদা নিয়ে
চুনে কালি—সরোবর খাঁ খাঁ মাছরাঙা বসে থাকে শুকনা ডালে.....
*
একজন ইথারের সাথে উড়তে উড়তে সূর্যে গেলাম, দেখি সূর্যের ভেতর পুড়তেছি আমি। সূর্যের মায়েরে কইলাম এখানে আমায় রেখে গেলো কে? বললো তোমার প্রেমিকা। ফিরে আসার সময় দেখা গেলো পৃথিবীর সামান্য উপরে গভীর কুয়াশার বাগান। কুয়াশার মা বললো ফিরে যাওয়ার সময় তোমার প্রেমিকা এখানে বসে দুঃখ করেছিলো।
*
নাহয় তুমি দানবের সাথে করো সঙ্গম
ঈর্ষায় মরুক ঈশ্বর, লজ্জা পাক পৌরুষ;
কাছে দাঁড়িয়ে বাহবা দেবো আমি।
তবুও নয় আদিম আলোয় আত্মবিসর্জন!
তাদের আলো থেকে বেরিয়ে আসো
লিলিথীয় অন্ধকারে অনাবৃত করে দাও বুক
লজ্জায় অন্দরে যাক ইভকাঙ্ক্ষী পুরুষ।
তোমার ফলন্ত বুক হতে
ঝরতে থাকুক সমতার অমৃত;
সঙ্গমের প্রভু জানুক তা হেমলক!
তুমি এসে দাড়াও উন্মুক্ত সমুদ্রের পাড়ে
কিতাবের পৃথিবী উল্টাতে থাক নিয়মের পাতা।
গালি দিতে থাক বলে রাতের রাণী
তবুও দিলাম কন্ঠ নিলাম আন্ধারের ভার।
শুধু বেরিয়ে আসো তুমি
সজ্জিত থাক পুতুলের খেলা ঘর
সেজদারত থাক ইভআত্মা আদিম শক্তির পায়ে।
সন্ন্যাসী আরণ্যক। কবি।
জন্ম ১৯৯৩ সালের ১২ নভেম্বর মাগুরা জেলার মহাম্মদপুর থানায়।
বাঙলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক, স্নাতকোত্তর।
জন্ম ১৯৯৩ সালের ১২ নভেম্বর মাগুরা জেলার মহাম্মদপুর থানায়।
বাঙলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক, স্নাতকোত্তর।
0 মন্তব্যসমূহ
মন্তব্যের যাবতীয় দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় নেবে না।